এক ঝুড়ি কল্পবিজ্ঞান লিমেরিক
লেখক: কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিতাভ প্রামাণিক, বিশ্বদীপ দে, দিগন্ত ভট্টাচার্য্য, মল্লিকা ধর, সৌম্য ব্যানার্জি, দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য, অরুণাচল দত্ত চৌধুরী
শিল্পী:
প্রথম বারের “কুড়ি শব্দের কল্পবিজ্ঞান” উৎসবে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত হয়েছিলাম। সেই ধারা বজায় রাখতে আমরা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে নিয়ে এসেছিলাম আরও একটি ইভেন্ট “কল্পবিজ্ঞান লিমেরিক উৎসব”। উৎসাহী বন্ধুদের সৌজন্যে আমরা পেয়েছিলাম ৩৫টিরও বেশি লিমেরিক। সেখান থেকে নির্বাচিত এক ঝুড়ি লিমেরিক আমরা সাজিয়ে দিলাম আমাদের কল্পবিশ্বের দ্বিতীয় সংখ্যায়।
অরুণাচল দত্ত চৌধুরী
(১)
গ্রহাণুর ভোট নেই, তবু চোরচোট্টা
 শনির বলয় এসে লুটে নিল ভোটটা।
 ভোট নেই উল্কার
 সেও দিল। ভুল কার?
 মহাকাশ কমিশন বোঝে সঙ্কটটা?
(২)
অ্যালিয়েন ভাগ্নেটি এসে বলে আমারে,
 “পৃথিবীতে চোখে কিছু দেখছি না, মামা রে!”
 অন্ধ কি হল চোখ?
 ভাবনাটা অমূলক।
 ওর চোখ দেখে শুধু এক্স-রে ও গামা রে।
দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য
(১)
“শুনছ দাদা ইউরেনাসে সার্কাসে এক খোকা
 কাগজ পেনে অংক কষে দিচ্ছে নাকি?” “ধোঁকা!!
 অংক, সেতো যন্ত্রে কষে
 আমরা দেখি কেবল বসে
 যা কষছে সব, খুঁজে দেখিস, কম্পু থেকেই টোকা”
(২)
ইস্ক্রু যানে পাতাল ফুঁড়ে কেন্দ্রে যাবেন ভবেন রুজ
 সঙ্গে আছে হাজার মেশিন, খাবার বড়ি, উড়ান শ্যু’জ
 কেন্দ্রে ছিল আঁধার তারা
 টানের চোটে লাগামছাড়া
 ছুট দিল যান পেরিয়ে জগত, হাজির হল বেটেলগ্যুজ
সৌম্য ব্যানার্জি
ক.বি.-দের লিমেরিক এ ভীষণ আড্ডায় 
 বিজ্ঞানে আমি বাপু চিরকালই গাড্ডায়
 ক.বি. নাকি নয় কবি 
 “কল্পবিশ্ব” সবই
 কল্পনাহীন আমি পড়ে গেছি খাড্ডায়!!
মল্লিকা ধর
দুই ব্ল্যাকহোল মিশে গিয়ে উঠলো বিষম ঢেউ
 মহাকর্ষের সেই তরঙ্গ আগে দ্যাখে নি কেউ
 পাতা ছিল লাইগো
 কোথায় পালাই গো
 এই বলে ঢেউ ধরা পড়ে’ কাঁদে ভেউভেউ।
দিগন্ত ভট্টাচার্য্য
নন্দলালের বুদ্ধি ভীষণ, সাতসকালেই মাঠে
 কোলেস্টেরল ঠিক রাখতে তড়বড়িয়ে হাঁটে!
 হাঁটতে গিয়ে পা আটকালে 
 হুড়মুড়িয়ে আছাড় খেলে 
 অ্যান্টি-গ্র্যাভিটি বেল্ট বাগিয়ে কোমরেতে সাঁটে!
বিশ্বদীপ দে
গতকাল হাবুদের ছাতে,
 ইউফো নেমেছে মাঝরাতে।
 অত রাতে কী বা জোটে,
 ইটিদের পাতে ওঠে
 মৌরলা ভাজা আলুভাতে।
অমিতাভ প্রামাণিক
বাঙালির বারো মাসে তেরোখানা পার্বণ!
 পেটটা গরম, খেয়ে গাদা গাদা কার্বন।
 খেয়ে কাঁকরোল, ঝিঙে –
 গ্লোবাল ওয়ার্মিঙে
 করে হাঁসফাঁস, বলে ডাক্তারদার বোন।
কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়
(১)
দু হাজার সত্তরে কাঠফাটা দুপুরে
 চলন্ত ফুটপাথে পটি করে কুকুরে ;
 কোথাও তো জল নাই –
 সাতপাঁচ ভেবে তাই
 টাইম মেশিনে এসে ধুয়ে গেল পুকুরে ।
(২)
সাতসকালে দুলকি চালে বললো পাড়ার রাণী,
 ‘ইউরেনাসে বসলো মেলা, রাখিস খবরখানি ?
 চল্ তো দেখি জলদি গিয়ে
 আগেভাগেই লাইন দিয়ে
 গোটাপাঁচেক ব্ল্যাক-হোল আর কমেট কিনে আনি !’
