কুড়ি শব্দের কল্পবিজ্ঞান
লেখক: অনুগল্প
শিল্পী: অন্তর্জাল
আমাদের ফেসবুক গ্রুপে “কুড়ি শব্দের কল্পবিজ্ঞান” নামে একটি ইভেন্টের আয়োজন করা হয়েছিল। এতে অভিজ্ঞানদা, দেবজ্যোতিদা, কৃষ্ণেন্দুদা এবং মল্লিকাদির পাশাপাশি আরও অনেক মেম্বার স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ইভেন্ট শেষে আমরা ১৫০টিরও বেশি অনুগল্প পেয়েছি। দাদা দিদিদের পাশাপাশি মেম্বারদের কিছু অনুগল্প এখানে সংকলিত করা হল। সমস্ত অনুগল্পগুলি পড়া যাবে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।
অভিজ্ঞান রায়চৌধুরী |
১) জ্বরের মধ্যেই টের পেলাম আমার কপালে ওর হাত। ধাতব জিনিষে যে এতো উত্তাপ থাকতে পারে আগে কোনদিন টের পাইনি। |
২) -দেখেছ, তোমাকে হুবহু আমার মতো করে তৈরি করেছি। |
দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য |
১) ‘ঔপনিবেশিক’ |
২) ‘ম্যাজিশিয়ান’ |
কৃষ্ণেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় |
বরফাবৃত গ্রহটায় ল্যান্ড করলো মাইক্রোরকেট-টা। মনিটরে কম্যান্ডার টাউ – “স্যার, এক্সপ্লোরিং সাকসেসফুল। ফসিলগুলো আড়াই লক্ষ বছরের পুরোনো। প্রজাতিটার নাম হোমো স্যাপিয়্যান্স।” |
মল্লিকা ধর |
১)তুঙ্গমুহূর্তের পরে। বীতশোক ঘুমিয়ে পড়েছে। অসীমা উঠে বললো, “সেভ দ্য প্রোগ্রাম”, তারপর নিজের কপালের মধ্যিখানের টিপটাতে চাপ দিয়ে মিলিয়ে গেল। |
২)প্রথমে এককণা আলো, তারপরে দু‘কণা। তারপরে অনেক। কে যেন বললো, “সিস্টেম রিস্টার্ট, এমেমটি ওয়ান।” তারপরেই আমি, ওরাক সাইবর্গ, উঠে দাঁড়ালাম। |
৩)মহাবিশ্ব অন্ধকার হয়ে আসছে, একসময়ে সব শেষ। তথ্যভরা হাইপারকিউবটি যত্ন করে তুলে রাখতে রাখতে Z বললেন, “কাল আবার নতুন সিমুলেশন।” |
৪)যান্ত্রিক দক্ষতায় দেখে নিল আরুহা, ডেটাবেসে সমস্ত জীবপ্রজাতির ডিএনে তথ্য। প্লাবনপূর্ব পৃথিবীকে বিদায় জানিয়ে চালু করলো হাইপারশিপ, লক্ষ্য গ্রহ K৪৪৩। |
৫)ঊষামুহূর্ত। বাক্সের ঢাকনা খুললেন ডক্টর তিং। নতুন ভাইরাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়ল। আর দুই দশক। তার পরেই বিপদসীমার নিচে নামবে জনসংখ্যা । |
৬)আকাশে দুটো সূর্য, বড়টা উজ্জ্বল হলুদ, ছোটোটা কমলা। সবুজ সমুদ্রতীরে ম্যাজেন্টারঙের বালি। ঝকঝকে রুপোলি কাছিমের দল। ত্রি বললেন, “এক্সপেরিমেন্ট সাক্সেসফুল।” |
৭)“নীল ব্যথা, তুলোতুলো গান, ঝালঝাল রোদ, অন্ধকারের গন্ধ, শঙ্খধ্বনির ডানা।” ডক্টর জীশান শুনে বললেন, “সবকটা অনুভূতিই এলোমেলো হয়ে জায়গাবদল করেছে।” |
৮)বিস্ময়স্তম্ভিত তুরিনার একহাত দূরে এসে থামলো উজ্জ্বল গোলক, এগারোটা পাপড়ির মতন খুলে গেল প্রবেশপথ, ওপাশে একাদশমাত্রার জগৎ। তুরিনা ঢুকে পড়ল। |
কল্পবিজ্ঞান ফেসবুক গ্রুপের সদস্যদের বাছাই করা ১৫ টি গল্প |
দিগন্ত ভট্টাচার্য |
‘আমার গপ্প’ নিজের বীভৎস মৃত্যু একটা আজগুবি স্বপ্নে দেখে ঘেমে উঠলাম। “ফিরিয়ে নাও। ডেটা স্যালভেজিং ইনকমপ্লিট।” স্বপ্নে আবার ডোবার আগে কানে এল। |
সন্দীপন গাঙ্গুলি |
এইবার জানবো ঘাতক সময়ের শুরুটা। বাইরে দুই পিএইচের বৃষ্টি ঝরছে। আমার তিনটে চোখ দিয়েই মনিটারে দেখে নিলাম উত্তর … বিংশ শতাব্দী। |
দীপ ঘোষ |
‘চিড়িয়াখানা’ অফিসঘরের মত দেখতে খাঁচাটার মধ্যে একজন মানুষ কম্পুটারের পর্দার উপর তন্ময় হয়ে ঝুঁকে ছিল। খাঁচার বাইরে লেখা- প্রাকৃতিক পরিবেশে মানুষ। |
বিশ্বদীপ দে |
লিখতে বসে দেখি নিজে নিজেই ভরে উঠছে পাতা! কেউ না জানলেও আমি জানি সমান্তরাল ব্রহ্মাণ্ডে আরেক আমি লিখছি সে লেখা। |
এডওয়ার্ড সিজারহ্যান্ড |
‘ঈশ্বর আসিলেন’ আজ আকাশ ফুঁড়ে নামবেন ভগবান, সমস্ত ধর্মগুরুরা জড় হয়েছেন, চেয়ে আছেন মেঘসমুদ্রে? ঈশ্বর? মেঘভেঙ্গে নামল Minuteman-III… পৃথিবীতে শান্তি ফিরে এলো… |
জয়দীপ বসু |
বেহালা বাজানো,শেষ হতেই,মুগ্ধ আমি বললাম, আপনার Theory of Relativity পড়েই বড় হয়েছি.. কিশোরটি অবাক হয়ে তাকাল… |
সূর্যনীল চাটার্জী |
সুনামী’র চল্লিশ ফুট জলে’র দেওয়ালটা ধীরে-ধীরে এগিয়ে আসছে। নস্ত্রাদেমাসে’র বইটা মুড়ে রেখে আমি বারান্দায় এসে দাঁড়ালাম। ভবিষ্যতবানী তাহলে সত্যি হয়… |
নিবেদিতা হালদার গাঙ্গুলি |
‘দ্রৌপদী’ সেক্স-রেসিও ভীষণ বেড়ে গেছে। আমার পাঁচ স্বামী, সবাই সুখী। আমি? চারজনকে বঞ্চিত করছি! চার সংসারে আমার চার ক্লোন দায়িত্বপালন করছে। |
মিথিল ভট্টাচার্য |
টাইম ট্রাভেলের নিয়ম ভেঙ্গে হোমো ইরেকটাসটিকে রে গান দিয়ে মুছে দিতে বাধ্য হলাম কিন্তু ওর সাথে নিজেও এবার মুছে যাচ্ছি । |
সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় |
সেলফোনটা হাতে নিয়েই টাইম মেশিনটা চালু করে দিয়েছিলাম। কয়েক শতাব্দী পিছোতেই, হাতে ধরা জিনিসটা যে কি, বহুচেষ্টাতেও মনে পড়ল না। |
অরুণাচল দত্ত চৌধুরী |
‘নিদান’ অপরাধহীন গ্রহে সবার এক্স ক্রোমোজোম। পূর্বনারীদের থেকে ইনকিউবেটরে জন্মাই। আমার মন খারাপের অসুখ। কম্পিউটার বলেছে, সারাতে হলে ওয়াই ক্রোমোজোমই চাই। |
সুদেব ভট্টাচার্য |
‘জাগো নিউটন’ পৃথিবীকে ধর্মান্ধতার হাত থেকে বাঁচাতে ছ’হাজার বছর পিছিয়ে এসে আমি গাছের ওপরে লুকিয়ে আছি। ছেলেটা নীচে বসল। আপেলটা ফেলে দিলাম। |
সোমদেব ঘোষ |
ফুটপাথে দাঁড়িয়ে এক ভিখিরি, সুটেড-বুটেড। — লাইফশেয়ার অাছে দাদা? এক্সট্রা? প্লীজ! — কতক্ষণ বাকি? — এক ঘন্টা। হার্টঅ্যাটাক নয়তো। দিলাম। দুঘন্টা এক্সট্রা বাঁচবে। |
তনুজিত চৌধুরী |
ইন্টারগ্যালাকটিক আদালতে ১৫০০ বছরের মামলাটির আজ নিষ্পত্তি হল। পৃথিবী নামক সুন্দর গ্র্হটিকে ধ্বংসের অপরাধে শেষ মানব সন্তানটিকে মৃত্যুদন্ড শোনানো হলো। |
প্রসেনজিত দাশগুপ্ত |
‘বাটারফ্লাই এফেক্ট’ ১৯৬৮ ২০১৫ |