ভিডিও গেমের খবর

  • লেখক: গেমারু
  • শিল্পী:

এই সংখ্যা থেকে শুরু করা হল নতুন একটি মাধ্যমের উপর আলোচনা বিভাগ। বই আর সিনেমার পরে যে মাধ্যমটি এই একবিংশ শতাব্দীতে আত্মপ্রকাশ করছে সেটি হল ভিডিও গেমস। পিউরিটানরা হইহই করে উঠবেন, যে এসব বাচ্চাদের জিনিস বলে। কিন্তু কি জানেন, ভিডিও গেম ইন্ডাস্ট্রি ২০১৫ সালে ৯১.৫ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে? আর যারা ভিডিও গেম খেলেন তাদের গড় বয়স কিন্তু ৩২ বছর। যাই হোক কল্পবিজ্ঞান আর ফ্যান্টাসিকেও অনেকে একসময় শিশু পাঠ্য মনে করত, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা যেমন মেইনস্ট্রীম আখ্যা পেয়েছে, সেরকমই ভিডিও গেমও বিনোদন মাধ্যম হিসেবে মানুষের মনে জায়গা করে নিচ্ছে। সিনেমার মতোই এই ভিডিও গেমের মাধ্যমেও বলা হচ্ছে অনেক নতুন রোমাঞ্চকর গল্প। উপরি পাওনা খেলোয়াড় হয়ে যাচ্ছেন সেই গল্পেরই একটি চরিত্র। অনেক ভিডিও গেমেরই গল্প হয় কল্পবিজ্ঞান নির্ভর। এই আলোচনায় প্রতিবার আমরা তুলে ধরবো এমনই এক একটি গেমের গল্পকে। বাংলায় এখনো কোন পত্রিকায় হয়ত এই রকম আলোচনা শুরু হয়নি। আরো অনেক কিছুর মতো এখানেও পথিকৃৎ হয়ে রইলো কল্পবিশ্ব।

গেমের নাম – বায়োশক ইনফিনিট

ডেভেলপার – ইর‍্যাসনাল গেমস

মুক্তির তারিখ- মার্চ, ২০১৩

জঁর- প্রত্যক্ষ সমর, অ্যাডভেঞ্চার

     চলুন ঘুরে আসা যাক ১৯১২ সালের স্টিমপাঙ্ক শহর কলোম্বিয়ায়, যা আকাশে উড়ছে কোয়ান্টাম লেভিটেশন পদ্ধতির দ্বারা। শহরটি তৈরি হয়েছে নবযুগের জননেতা কমস্টকের হাতে, যাকে শহরের বাসিন্দারা ভগবান বলেই মানে। স্কাইরেইল করে ঘুরে দেখুন এই শহরের সৌন্দর্য, কান পাতুন হয়ত শুনতে পাবেন ৫০ বছর ভবিষ্যতের কোন গান। বিশাল কারখানা থেকে শুরু করে দোতলা বাড়ির সমান বড় রোবট সবই দেখতে পাবেন এই ভবিষ্যতের শহরে। কিন্তু কোন জাদুকাঠির ছোঁয়ায় কমস্টক খুঁজে এনেছে এই ভবিষ্যতের প্রযুক্তি, ১৯১২ সালের আমেরিকায়? শহরের মাঝখানের মেঘের মাঝের টাওয়ারে কাকে বন্দী করে রাখা হয়েছে? এই সবের উত্তর খুঁজতে শহরে হাজির হয় খেলোয়াড়, বুকার দেউইট নামে এক ভাড়াটে সৈনিকের চরিত্রে।

     শহরে পা দেবার পরেই বুকার বুঝতে পারে, দূর থেকে ইউটোপিয়া মনে হওয়া এই সুন্দর শহরের রাস্তায় রাস্তায় ছড়িয়ে আছে মরন ফাঁদ আর চক্রান্তের জাল ছড়িয়ে গেছে অনেক গভীরে। শহরের মানুষ এক অদ্ভুত নব খৃষ্টধর্মে বিশ্বাসী যার মূলে আছে কমস্টকের নিজেকে ধর্মগুরু হিসেবে প্রচার করা। সমস্ত শহরের উপরে কড়া নজর রাখছে পুলিশ আর মিলিটারি। তারা ব্যাবহার করছে এমন উন্নত প্রযুক্তি যা বুকার কল্পনাতেও আনতে পারে না। বুকারকে কিন্তু এই শহরে পাঠানো হয়েছে একটা বিশেষ কাজে। ওই টাওয়ার থেকে উদ্ধার করতে হবে এলিজাবেথ নামে একটি কিশোরীকে। কিন্তু এলিজাবেথের অদ্ভুত ক্ষমতা হল বিভিন্ন মাত্রার সমান্তরাল জগতের মধ্যে দরজা তৈরি করতে সক্ষম সে। বুকার আরো জানতে পারে যে কমস্টক অপেক্ষা করছিল বুকারের আসার জন্যে, কোন অজানা উপায়ে সে বুকারের সমস্ত জীবনের কথাই জানে। বুকার আর এলিজাবেথ পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে জড়িয়ে পরে  উচ্চশ্রেণীর শ্বেতাঙ্গ প্রভু ও কালো আর বাদামী চামড়ার ‘ভক্স পপুলির’ মধ্যে শ্রেণী সংগ্রামে। এরপর বুকারের কি হল আর কলোম্বিয়ার রহস্য জানতে গেলে খেলতে হবে বায়োশক ইনফিনিট।

     প্রত্যক্ষ সমর ভিত্তিক খেলা হওয়ার জন্যে বুকার প্রচুর অস্ত্র ব্যাবহার করতে পারে কলোম্বিয়ায়। ভূপাতিত শত্রুদের থেকে পাওয়া যায় গুলি, বন্দুক বা ব্যান্ডেজ। এছাড়াও আছে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে জিন পরিবর্তন করে অতিমানবিক শক্তি। এই দুই ধরনের অস্ত্র নিয়ে খেলোয়াড়কে সম্মুখীন হতে হয় কলোম্বিয়ার অগুন্তি বিপদের। খেলার দ্বিতীয় ভাগ থেকে এলিজাবেথও সাহায্য করা শুরু করে লড়াইয়ের মাঝে।

     প্রায় তিন বছরের পুরনো গেম হওয়ার জন্যে যেকোনো নতুন কম্পিউটারেই খেলাটি ভালোই চলবে। এছাড়াও এক্স-বক্স বা প্লে-স্টেশনেও এটি খেলা সম্ভব।

     কল্পবিশ্বের তরফ থেকে এই খেলাটিকে গল্প আর গ্রাফিক্সের জন্যে ১০ এর মধ্যে ৯ দিলাম।

Tags: গেমারু, প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যা, ভিডিও গেমের খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: Content is protected !!