কল্পবিশ্ব আর এল-ডোরাডো’র কথামালা

  • লেখক: অনুলিখন - সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায়
  • শিল্পী: তৃষা আঢ্য

ত বছরের আলাপচারিতায় এক বিনিসুতোর বাঁধন তৈরি হয়েছিল কল্পবিশ্বের শুভানুধ্যায়ী শ্রদ্ধেয় শ্রী সন্দীপ রায়ের সঙ্গে কল্পবিশ্ব টিমের, যার পরিচয় কল্পবিশ্বের পাঠকেরা পেয়েছিলেন ২০১৭-র পুজো সংখ্যায়। সেই আলাপকেই আবার ঝালিয়ে নিতে গত ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ তারিখে আমরা আবার হাজির হয়েছিলাম বিশপ লেফ্রয় রোডের রায়বাড়িতে, যা আমাদের আকৈশোরের হিং টিং ছট স্বপ্নের দালান। আমাদের একটা উদ্দেশ্য ছিল কল্পবিশ্বের তরফ থেকে একান্ত কৃতজ্ঞতাস্বরূপ ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন ২০০’ সংকলন গ্রন্থ ওঁর হাতে তুলে দেওয়া, যে বইতে সত্যজিৎ রায়ের ‘শঙ্কু ও ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’ গল্পের পুনর্মুদ্রনের জন্য সন্দীপবাবুর অনুমতি পাওয়া গিয়েছিল আগেই। এই আলাপের আরেকটা দিক হল এই বছরের শেষ নাগাদ রিলিজ হতে যাওয়া ‘শঙ্কু ও এল ডোরাডো’ ছায়াছবির শ্যুটিং এর নানা মজার আর এক্সক্ল্যুসিভ ঘটনা ওঁর নিজের বয়ানে শোনার অভিজ্ঞতা। যে ছবি দেখার জন্য আমরা মানে ফ্যান্টাসি আর কল্পনাপ্রেমী বাঙালী পাঠক মুখিয়ে আছি। সেদিনকার সেইসব মজার কথাবার্তা তেমনি আটপৌরে বিন্যাসে উঠে এল এখানে। সন্দীপ রায়ের মুখোমুখি কল্পবিশ্বের তরফ থেকে সেদিন আমরা উপস্থিত ছিলাম চারজন মানে দীপ ঘোষ, ঋদ্ধি গোস্বামী, অরুণাভ গঙ্গোপাধ্যায় আর সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায়।   

       সন্দীপ বাবুর হাতে ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন ২০০’ সংকলন গ্রন্থ তুলে দেয়ার মুহূর্তটা ধরা পড়েছে স্মৃতির অমলিন ফ্রেমে।

 

কল্পবিশ্ব: যে প্রশ্নটা প্রথমেই মনে আসে মানে যেটা হয়তো অনেকেই বলেছেন আপনাকে সেটা হল শঙ্কুর এত গল্পের মধ্যে আপনি কেন প্রথমে ‘নকুড়বাবু ও এল ডোরাডো’কে বাছলেন?

সন্দীপ রায়: আমার করার ইচ্ছে ছিল ‘একশৃঙ্গ অভিযান’। আমি সেটা অনেককে বলেওছিলাম।

কল্পবিশ্ব: সেটা আমাদেরও খুবই পছন্দের।

সন্দীপ রায়: কিন্তু ‘একশৃঙ্গ অভিযান’ এর ক্ষেত্রে আমি দেখলাম যে, স্পেসিফিক যে জায়গাটায় গিয়ে শ্যুটিং করতে হবে সে জায়গার ইনফ্রাস্ট্রাকচার জিরো এবং সেখানে এমন ওয়েদার যে অক্সিজেনের পরিমাণ বিপদজনকভাবে কম। একটা এতবড়ো ইউনিট নিয়ে গিয়ে যদি কোনও ক্যাজুয়্যালটি হয়ে যায় বা কোনও গোলমাল হয়ে যায় তাহলে বিপদ। তা ছাড়া এর ক্লাইম্যাক্সটা ঠিক ওইভাবে মানে ভিস্যুয়ালি অ্যাচিভ করতে পারব কি না সেটা নিয়েও আমার সন্দেহ ছিল।

কল্পবিশ্ব: হ্যাঁ ওই ব্লিজার্ড আর প্রায় অন্য জগতের দৃশ্যটা।

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ, ইউনিকর্ণ ইত্যাদি নিয়ে পুরো ব্যাপারটাই।

কল্পবিশ্ব: ভি.এফ. এক্স খুব হাই কোয়ালিটির হতে হবে।

সন্দীপ রায়: ভিএফএক্স তো অবশ্যই হাই কোয়ালিটির লাগবে। বিদেশে ছাড়া হবে বলেও মনে হয় না। যে কারণে আমার একটু ভয় ছিল। তবে আমি করব। যদি একটা এর কাছাকাছি টোপোগ্রাফির কোনও জায়গা পাই যেখানে ইনফ্রাস্ট্রাকচারটা ভালো আর যেটা মোটামুটি মিলে যাচ্ছে গল্পের বর্ণনার সঙ্গে। মানে গুম্ফা ইত্যাদি তো পরে অ্যাড করে নিতেই পারি আমরা তাতে কোনও অসুবিধা নেই। যে স্ট্যান্ডার্ড অব ভি.এফ.এক্স হয়ে গেছে এখন তাতে এটা কোনও ব্যাপারই না। শুধু শেষের ওই ভিস্যুয়াল ফ্রেমটা যদি অ্যাচিভ করা যায় তাহলে আর কথা নেই। তবে আমার আসলে নকুড়বাবুকে খুব ফ্যাসিনেটিং লাগে এবং তার যে ক্ষমতা সেটা খুব ইন্টারেস্টিংভাবে ব্যবহার করা যায়। আর একটা জিনিস সেটা অবশ্য একশৃঙ্গের ক্ষেত্রেও বলা যায় মানে একবার শঙ্কু বিদেশ চলে গেলে ভাষাটা ইংরেজী হয়ে যাচ্ছে তো, সেটাতে আমার একটু আপত্তি। একজন বাঙালী চরিত্র যদি থ্র্যু-আউট থাকে, তাহলে একটা বাংলা কানেক্ট থাকছে যেটা খুব ইন্টারেস্টিং। কারণ শঙ্কুর সঙ্গে এতদিন ধরে সন্ডার্স আর ক্রোল রয়েছে, তারা অবশ্যই কিছু কিছু বাংলা জানে, কিন্তু তারা তো গড়গড় করে বাংলাতে কথা বলবে না, আর সেটা শুনতেও বেখাপ্পা লাগবে। আমার মনে হয়েছিল যে নকুড়বাবুর মতো একজন বাঙালী চরিত্র থাকলে খুব ইন্টারেস্টিং হবে, একশৃঙ্গে যেমন অবিনাশবাবু আছেন। তা ছাড়া যতটা ভিএফএক্স এর ব্যাপার আছে ততটা করা যাবে মানে গল্পটায় যে বর্ণনাগুলো আছে। এর কিছু নমুনাও আমি দেখেছি, কিছু কন্সেপচুয়াল আর্টওয়ার্ক দেখানো হয়েছে আমাকে। সেটাকে এবার থ্রি-ডি-তে কনভার্ট করতে হবে। আরেকটাও ব্যাপার ছিল যে নকুড়বাবু তো দুটো গল্পে আছে ইউএফও আর এটা। ইউএফও খুবই ইন্টারেস্টিং, কিন্তু ওয়ান ট্র্যাক গল্প। 

কল্পবিশ্ব: হ্যাঁ, পুরো ঘটনাটাই ওই ভিনগ্রহী ব্যাপারটাকে নিয়ে।

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ, কিন্তু দেখো এই গল্পটাতে অনেকগুলো ট্রিবিউটারিস আছে যেটাকে ইন্টারেস্টিং করে ফিচার লেন্থে নিয়ে আসা যায়। আনফরচুনেটলি শঙ্কুর সব গল্পকে ফিচার লেন্থে নিয়ে আসা খুব মুস্কিল একসেপ্ট ফর একশৃঙ্গ অভিযান। ভবিষ্যতে তেমন হলে হয়তো ডাবল শঙ্কু করতে হবে, ইন্টারভেলের আগে একটা, ইন্টারভেলের পরে একটা। বাবার গল্প আসলে বাড়ানো খুব কঠিন আর বিশ্রী হয়ে যায় বাড়াতে গেলে। মানে এত অদ্ভুত একটা ফ্যাটলেস কোয়ালিটি আছে ওঁর গল্পে যে ভীষণ লুজ হয়ে যায় যদি জোর করে বাড়াতে যাও। এই সব মিলিয়ে আমার মনে হয়েছিল যে ‘নকুড়বাবু ও এল ডোরাডো’টা সবথেকে অ্যাপ্রোপ্রিয়েট ছবি করার জন্য। আর যারা প্রোডিউসার তারা একবার ব্রেজিলে গিয়ে একটা ছবি করে এসেছেন। আমিও চাইছিলাম এমন একটা ইউনিট মানে এক্সপেরিয়েন্সড একটা টিম যাতে ওখানে গিয়ে শ্যুট করতে অসুবিধা না হয় আমাদের। কারণ ওখানে একটা ভাষার সমস্যা আছে। যা-ই হোক এই হল কারণ আর শুভাশিস এখন ক্লোসেস্ট রিজেম্বলেন্স অব নকুড়বাবু এবং খুবই উঁচুদরের একজন অভিনেতা। নকুড়বাবুর একটা ইলাস্ট্রেশন ফলো করে ওর মেকআপটাও দারুণভাবে করা গেছে। আর আমাদের ওখানে যিনি লাইন প্রোডিউসার তাকে মোটামুটি তো গল্প পাঠানো হল সেখানে ইংরেজী থেকে ব্রেজিলিয়ান পর্তুগিজে অনুবাদ হল।

কল্পবিশ্ব: সন্ডার্স, ক্রোল এরা কি ওখানকার?

সন্দীপ রায়: ফরচুনেটলি সন্ডার্স আর ক্রোলের খুব ভালো ছবি বা পোট্রেট ছিল একশৃঙ্গ অভিযানে। সেগুলো পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাবা ছবিগুলো এঁকে আমাদের কাজ আরও শক্ত করে গেছেন। মিল না হলে মানে একটুও মিল না হলে সবাই মিলে ধরবে তখন আমাদের। যেটা জেরেমি ব্রেটের শার্লক হোমস পারে সেটা পারা তো সত্যি বেশ চাপের। হয়তো চেহারা পেলাম কিন্তু অত্যন্ত খারাপ অভিনেতা হয়ে গেল। বিশেষ করে জেরেমি ব্রেটের ওই সিরিজটা মনে হয় যেন একেবারে সিডনি প্যাজেটের ইলাস্ট্রেশন থেকে উঠে এসেছে। অদ্ভুত একটা ব্যাপার। যা-ই হোক, আমরা তো ছবি পাঠালাম এবং আমাদের কাছে প্রচুর ছবি এসেছিল ওখানকার অভিনেতাদের। মেনলি ওখানকার আর্টিস্টরা সাও পাওলো আর রিও এই দু-জায়গাতেই বেস করে আছেন। রিও হচ্ছে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি আর সাও পাওলো হচ্ছে থিয়েটার ইন্ডাস্ট্রি। সেইসব জায়গা থেকে ছবি এল আর ফরচুনেটলি তার মধ্যে থেকে এক-দুজন ওই চেহারার কাছাকাছি পাওয়া গেল। তবে আমরা খুব লাকি যে ওরা টেম্পারমেন্টের দিক থেকে, ভাষা জানার দিক থেকে অদ্ভুত মানুষ। দারুণ এক্সপেরিয়েন্সড। মানে এটায় কী যে ফেস করব আমরা একেবারেই জানতাম না। এখানে শ্যুটিং করেছি, এখানকার লোকদের সম্বন্ধে জানি। কিন্তু ব্রেজিলে গিয়ে কেমন লোকজন পাব কিছুই জানতাম না। এদিকে ছবি পাচ্ছি, ছবি লক করছি। কিন্তু আমায় সবাই বলল যে এরা খুব ভালো আর এরা সবাই ফ্লুয়েন্টলি ইংরেজি বলতে পারে। তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পারো যে এরা সবাই ট্রায়েড অ্যান্ড টেস্টেড। অনেকে আবার স্ক্রিপ্ট পড়ে পাঠাল মানে এখন তো সব অন্য রকম সিস্টেম হয়ে গেছে। তা ওরা ডেমো ইত্যাদি পাঠাল। কাজেই ওখানকার ইউনিটটা খুবই ভালো পেয়েছিলাম। শারীরিক ব্যাপারটা না হলে আমাদের ভীষণ ভালো এক্সপেরিয়েন্স। মানে যদ্দূর কাজ হয়েছে সেটা খুবই ভালোভাবে হয়েছে। মোটামুটি ধরে নাও সিক্সটি পারসেন্ট কাজ হয়ে গেছে আমাদের। বাকী ফরটি পারসেন্ট তুলতে পারলেও ভালো হত। কিন্তু শঙ্কুই যদি অসুস্থ হয়ে যায় তাহলে তো কিছু করার নেই আপাতত।

কল্পবিশ্ব: ওই বাকী অংশটা কি আবার ব্রেজিলে গিয়েই তুলতে হবে?

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ আবার ব্রেজিলে যেতে হবে, তা ছাড়া গতি নেই। তা না হলে তো আবার সব আনতে হবে সেটা একটা বড়ো খরচ। মানাওস যে খুব একটা এক্সপেন্সিভ জায়গা তা না তবে এয়ারফেয়ার ভীষণ এক্সপেন্সিভ। তবে ওখানে ইউনিটটা খুবই অ্যাডজাস্ট করে নিল। ওরা বলল যে তোমরা যেদিন শ্যুটিং করছ না আমরা তোমাদের চার্জ করব না।

কল্পবিশ্ব: বাঃ, এ তো খুবই ভালো আর কো-ওপরেটিভ।

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ, খুবই ভালো। একটা খুব ইন্টারেস্টিং অভিজ্ঞতা হল। যিনি সলোমন ব্লুমগার্টেন করছেন।

কল্পবিশ্ব: মানে সল?

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ সল আরকি। সাও পাওলোর একজন আর্টিস্ট ফার্নান্দোকে বাছলাম ওই চরিত্রে। আমরা যেদিন পৌঁছলাম তার দিন দুয়েকের মধ্যে সব তো চলে এল, আমাদের লুক টেস্ট, মেকআপ, কস্টিউম সব হয়ে গেছে। তা  সে তো একগাল দাড়ি নিয়ে এসেছে, সেগুলো ছাঁটাছাঁটি চলছে। আমাদের মেকআপম্যান করছেন সেসব, ন্যাচারালি আমি সেই ঘরেই আছি। আমাদের হোটেলের নিচে দুটো অফিসঘর দিয়ে দেওয়া হয়েছে মানে একদম ফিল্মের অফিস আর কি। একটা ঘরে শেড্যুল ইত্যাদি করা হচ্ছে আর একটা ঘরে কস্টিউম সব রাখা আছে। সে মেকআপ করতে করতে বলল যে, “সো ইউ আর অল ফ্রম ক্যালকাটা?”। আমরা বললাম হ্যাঁ। তখন সে বলে কলকাতা থেকে এসেছ মানে সবাই অবশ্যই সত্যজিৎ রায়ের নাম শুনেছ।

(সমস্বরে সবাই মিলে হেসে ওঠা)

আমি ভাবলাম যে দেবো না কি দেবোনা? তারপর আমি খুব হালকা করে বললাম যে “আই অ্যাম হিজ সন।” তখন সে মেকআপম্যানকে ঝটকা মেরে ফেলে উঠে দাঁড়িয়ে একেবারে জড়িয়ে ধরিয়ে বলল যে আমি জানো অনেকদিন সানফ্রান্সিস্কো ফিল্ম স্কুলে পড়েছি এবং আমাদের সাবজেক্ট ছিল সত্যজিৎ রায়ের ছবি। এই হচ্ছে ব্যাপার। যা-ই হোক এটা একটা ভীষণ ভালো একটা অভিজ্ঞতা।

কল্পবিশ্ব: আচ্ছা ওখানে সন্ডার্স এরা কি বাংলায় কথা বলবে?

সন্দীপ রায়: না না সব ইংরেজিতে। তা না হলে মুস্কিল। আমরা আসলে যেটা করব ঠিক করেছি যে রিলিজের সময় দুটো ভার্সান রিলিজ হবে। একটা হচ্ছে একটু শহরতলির জন্য সেখানে একটা বাংলা ভার্সান রিলিজ হবে আর একটা প্রপার শহরে মাল্টিপ্লেক্স ইত্যাদি জায়গায় রিলিজের জন্য। সেখানে ইংরেজি হলে ইংরেজি আর বাংলা হলে সাথে ইংরেজি সাবটাইটেল। মানে ওটা আমরা বলব ডিরেক্টার্স কাট। তবে এটা এস্টাব্লিশ করা আছে যে এরা দুজনেই বাংলা জানে সেটা শঙ্কু ইনফ্যাক্ট নকুড়কেই বলছে যে অতো ঘাবড়ানোর কিছু নেই। কারণ নকুড় যখন বাংলায় বলছে ক্রোল সন্ডার্স এরা রয়েছে তা এরা কিছুই না জানলে তো শঙ্কুকে কন্সট্যান্টলি ট্রান্সলেট করতে হবে। সেটা ভীষণ খারাপ আর ছবিটাকে ঝুলিয়ে দেয়। কাজেই আমরা ধরে নিচ্ছি যে ওরা বুঝতে পারে, কিন্তু অতোটা ফ্লুয়েন্ট বলতে পারে না। আর যখন নিজেদের মধ্যে কথা হচ্ছে সেটা তো অবশ্যই ইংরেজিতে হচ্ছে।

জমে উঠেছে এল-ডোরাডোর গপ্পো। সঙ্গের ছবিতে সন্দীপ বাবুর সাথে আলাপচারিতায় দেখা যাচ্ছে দীপ ঘোষ আর ঋদ্ধি গোস্বামীকে।

কল্পবিশ্ব: আর ভি.এফ. এক্সগুলো আপনি কোথা থেকে করাবেন? মানে সাপ-টাপ!!

সন্দীপ রায়: দ্যাখো, আমার নিজের ইচ্ছে যে ভিএফএক্সগুলো সব কলকাতাতেই করার। এখন কলকাতায় যারা করে মানে ফোর্থ ডাইমেনশন ভিস্যুয়াল এফেক্টস, রজত দলুই বলে একজন করেন। তিনি বহুদিন ধরে আমাদের সঙ্গে আছেন। কিছু কিছু করেছেন। টাইটেলগুলো ডিজাইন করেছেন। এরা খুব ভালো। আমি চাই এরাই করুক, দেখি না আমাদের সময় আছে হাতে। কারণ আমাদের মোটামুটি ডিসেম্বর ২০১৯ এ ছবি রিলিজ। তার আগে আমরা দেখি। সেরকম যদি হয় তাহলে হয়তো অন্য জায়গায় যেতে হবে কিন্তু আমার নিজের ইচ্ছে পুরো জিনিসটা কলকাতায় হোক। তাতে আমরাও বেশ একটা বুক ফুলিয়ে বলতে পারব।

কল্পবিশ্ব: হ্যাঁ, এমন জিনিস যে কলকাতায় হতে পারে সেটা সবাই জানুক।

সন্দীপ রায়: সেটাই। আর এখানে ভি.এফ.এক্স-এ কোন কম্প্রোমাইজ হবে না, সেটা আমরা করতে চাই না। বিশেষ করে শঙ্কুর ক্ষেত্রে তো নয়ই। কারণ যেহেতু এটা ইংরেজি, কাজেই একটা ওয়ার্ল্ড মার্কেট ধরে নিতে পারি যদি প্রোডিউসারেরা যথেষ্ট সতর্ক থাকেন। কাজেই আমি চাই না কোনও কম্প্রোমাইজে যেতে। যে কারণে আমরা চলে এলাম, কারণ ধৃতিদা বলছিলেন যে কিছুটা করে নাও। কিন্তু বড়ো পর্দায় অসুস্থতা ধরা পড়ে যায়, চোখে মুখের ভাবটা। যতোই আমরা দাড়ি, মেকআপ দিই না কেন!!

কল্পবিশ্ব: আচ্ছা শঙ্কুর বাড়ি তো গিরিডিতেই দেখান হয়েছে?

সন্দীপ রায়: শঙ্কুর বাড়ির জন্য গিরিডিতে খুঁজে তেমন মনের মতো পাওয়া গেল না। গিরিডিতে আমাদের রায় পরিবারের বাড়ি আছে, সেটা ভারি সুন্দর। আমি নিজের খুব ইচ্ছে ছিল ওই বাড়িটা যদি দেখান যায়, তাহলে একটা স্যালুটও হবে মানে রায় পরিবারের বাড়িতেই শঙ্কু থাকেন। সেটা করা গেল না কারণ, ওটা এখন অলরেডি একটা গেস্ট হাউস হয়ে গেছে সেটার হাতবদল হয়ে গেছে। আর সেটা এখন শহরের একেবারে মধ্যিখানে, চারিদিকে বিশাল দেয়াল। কাজেই, কোন মজা নেই দেখিয়ে, কিন্তু বাড়িটার স্ট্রাকচার খুবই ভালো। আর ওখানে মানে ঝাড়খণ্ডে দেখলাম বাঙালীদের বাড়ির একটা টিপিক্যাল স্ট্রাকচার রয়েছে। যেখানেই যা বাঙালীর বাড়ি দেখছি তার আর্কিটেকচারটা একই রকমের। তা এরপরে আমরা একটু ঘুরলাম চারিপাশে। দেওঘর গেলাম, অনেকেই বলল তার আশেপাশে পাওয়া যেতে পারে। তা ছাড়া কাছেই শিমূলতলা তো আছেই, যেটা একসময় তরুণ মজুমদারের প্রিয় ঠেক ছিল শ্যুটিং এর। তা দেওঘরের কাছে রিখিয়া বলে একটা জায়গা আছে, যা প্র্যাক্টিক্যালি দেওঘর থেকে মিনিট দশেকের পথ। সেখানে একটা খুব ভালো বাড়ি পেয়ে গেলাম। মানে উশ্রীর ধারে ঠিক হল না, কিন্তু ভীষণ সুন্দর। বাইরেটা দারুণ আর বিশাল একটা গ্রাউন্ড আর চতুর্দিকে গাছপালায় ভরে আছে। আর সবে হাতবদল হয়েছে, কিন্তু একসময় বাঙালী পরিবারের ছিল।

কল্পবিশ্ব: আচ্ছা শঙ্কুর টাইমলাইনটা কোন সময় থাকছে মানে এটা কি এগিয়ে আসছে?

সন্দীপ রায়: শঙ্কুর টাইমলাইনটা একটু এগিয়ে আনা হয়েছে। পরে অবশ্য আমি বিপদে পড়ব যদি স্বর্ণপর্ণী করতে চাই। কিন্তু মুস্কিল হচ্ছে যে সাও পাওলো ওই সময়ে দেখান খুব ডিফিকাল্ট। কারণ এটা তো শহর, সাও পাওলোতে যেমন প্রচুর ইন্সটিটিউট রয়েছে, হোটেল রয়েছে।

কল্পবিশ্ব: সেগুলোকে ওরকম সেভেন্টিজের লুক দেওয়া!!

সন্দীপ রায়: সেটা খুব ডিফিকাল্ট। এটা যদিও এইট্টিজ এর গল্প। যা-ই হোক, বাইরেটা আসলে ভীষণ বেশি পালটে গেছে। এখানেই তো অনেক পালটে গেছে। এখানে এখন আশির দশক তো পিরিয়ড ফিল্ম হয়ে গেছে প্র্যাক্টিক্যালি, কাজেই আমি মোটামুটি দু হাজার ষোলো রেখেছি সময়টা।

কল্পবিশ্ব: আপনি গতবার বলেছিলেন যে ‘সত্যজিৎ রায় প্রেজেন্টস’ এ কলকাতার সেই আশির দশকের ছবিটা আছে। মানে মেট্রো তখন হচ্ছে সবে।

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ সেই ফুটেজ তো অবশ্যই ছিল। এখন দেখতে অদ্ভুত লাগে সেসব।

কল্পবিশ্ব: আচ্ছা শঙ্কুর গল্পে তো দেখা যায় যে ঘটনাগুলো হয়ে গেছে আর শঙ্কু ডায়েরিতে লিখছে সেসব। এখানেও কি  ওইরকম ন্যারেশনের ভিত্তিতে সব দেখানো হবে?

সন্দীপ রায়: ডায়েরিটা রাখতে হবে। কারণ ওটা একটা আলাদা স্ট্রেন্থ।

কল্পবিশ্ব: হ্যাঁ জিনিসটা তো আসলে ডায়েরি।

সন্দীপ রায়: একদম তাই। ডায়েরি থেকেই আমরা চলে যাব গল্পে। অ্যাটলিস্ট একবার দুবার আমরা দেখিয়েওছি যে ডায়েরি লেখা হচ্ছে। মানে ডায়েরি তো আর অ্যাকশনের সময় লিখবে না। সব ঘটনা হয়ে যাওয়ার পর রাত্রে বসে লিখবে। আর মাঝে মাঝে সেই কোন ঘটনার সূত্র ধরে ‘এবার লেখা বন্ধ করি গোছের’ ব্যাপার।

কল্পবিশ্ব: হ্যাঁ ওই কে যেন দরজায় নক করছে। কিছু একটা বাইরের শব্দ আসছে। এরকম একটা!!

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ। কাজেই আমরা এস্টাব্লিস করছি যে একবার বা দুবার যে ডায়েরি লেখা হচ্ছে। এটা হলে শঙ্কুর ফ্যানদেরও ভালো লাগবে।

কল্পবিশ্ব: হ্যাঁ আর ডায়েরি লেখা কমে গেলেও কিছু মানুষ তো অবশ্যই লেখেন। সুতরাং সেটা এই জেনারেশনও রিলেট করতে পারবে আশাকরি।

সন্দীপ রায়: আমার ছেলে সৌরদীপও ডায়েরি লেখে রোজ রাত্রে।

কল্পবিশ্ব: আচ্ছা এতদিন শঙ্কুর জন্য ওয়েট করলেন কেন? সেটা কি ভি.এফ.এক্স?

সন্দীপ রায়: অবশ্যই ভিএফএক্স, আর কোনও কারণ নেই।

কল্পবিশ্ব: আমরা সবাই খুবই এক্সপেক্ট করে আছি।

সন্দীপ রায়: আমিও ভয়ে আছি শঙ্কু ফ্যানদের জন্য। এখন দেখা যাক, কিরকম হয়? তবে কিছু কিছু ব্যাপারে পড়াশোনা তো সবসময়ই করতে থাকি।

কল্পবিশ্ব: যে সময় আপনি বোম্বাইয়ের বোম্বেটে করেছেন, সে সময় শঙ্কু করা মনে হয় অসুবিধা ছিল।

সন্দীপ রায়: না না, শঙ্কু করার এখনই হচ্ছে অ্যাপ্রোপ্রিয়েট সময়। তবে বেশি ভি.এফ.এক্স হলে আবার একটু বিপদ।  সেক্ষেত্রে বাইরের প্রোডিউসারের সাহায্য নিতে হবে আর কি। কিন্তু আমরা কম্ফর্টেবল এখানকার প্রোডিউসারদের সঙ্গে। যেমন ধর, এই যে একটা সমস্যা হল এখন কি করব। সেক্ষেত্রে সোজাসুজি ঠিক হয়ে গেল যে ফিরে এসে পরে আবার যাবে। ইনস্ট্যান্ট ডিসিশন হয়ে গেল। এইটা বাইরের প্রোডিউসার হলে খুব চাপ হত।

কল্পবিশ্ব: শঙ্কুর গল্পের আইকনিক ব্যাপারগুলো কি থাকবে?

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ সেটা তো থিমটাকে এস্টাব্লিস করার জন্য রাখতে হয়। যেমন, শঙ্কুর ল্যাবরেটরি আর বিধুশেখর থাকছে।

কল্পবিশ্ব: বাঃ এটা দারুণ ব্যাপার।

সন্দীপ রায়: তবে তার করণীয় কিছু থাকছে না। কিন্তু যারা জানে তারা মজা পাবে আর কি।

কল্পবিশ্ব: হ্যাঁ, রেফারেন্সগুলো ধরতে পারবে। নিউটনও থাকছে আশা করি।

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ, নিউটন তো অবশ্যই থাকছে। ভি.এফ.এক্স নয় (সবাই সমস্বরে হেসে উঠি)। একেবারে টাটকা একটা নিউটন পাওয়া গেছে। পার্সিয়ান টাইপের সাদা বেড়াল এবং তাকে নিয়ে অতটা বেগ পেতে হয়নি। এমনিতে বেড়াল পোষ মানানো খুব চাপের।

কল্পবিশ্ব: পার্সিয়ান বেড়ালগুলোকে পোষ মানানো মনে হয় তুলনামূলকভাবে সহজ। ইন্ডিয়ান স্ট্রে-ক্যাটগুলোর ক্ষেত্রে সেটা খুব ঝকমারি।

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ, তাই দেখলাম। আমি চাইছিলাম এটা একটু ফ্লাফি গোছের হোক। এমনিতে ঠিক ছিল তবে লাইট, লোকজন ইত্যাদি দেখলে একটু ছটফটে হয়ে যায়। সে নাকি আবার প্রফেশনাল।

কল্পবিশ্ব: তাকে কি কলকাতা থেকেই পেলেন?

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ, কলকাতা থেকেই পেলাম। এ ছাড়া যেমন ওই ব্যোমযাত্রীর ডায়েরির প্লেনের একটা মডেল রয়েছে ল্যাবরেটরির এক জায়গায়। যারা একটু নজর দিয়ে দেখবেন তারা দেখতে পাবেন যে যেটা শ্যাঙ্কোপ্লেনের একটা বেসিক মডেল রয়েছে, ধরে নিতে পারি যে তার থেকে পরে মেইন মডেলটা তৈরি হবে। এইসব ভিস্যুয়াল রেফারেন্স চারিদিকে ছড়ানো আছে। আর একটু মন দিয়ে দেখলে কর্ভাসের খাঁচাটাও দেখতে পাওয়া যাবে। খুব রিয়্যালিস্টিক ল্যাব না করে একটু গথিক টাইপের ল্যাব করা হয়েছে যেটা গল্পের মেজাজের সাথে যায়। খুব মজা হয়েছে এটা করতে গিয়ে। আর বাড়ি ইত্যাদির বেসিক লুক ইত্যাদিও ভালো লাগছে। তবে আমাকে যেটা খুব সমস্যায় ফেলেছিল সেটা হল অ্যানাইহিলিন। আমরা দুরকমভাবে চিন্তা করেছিলাম আসলে একটা ধাতুর কথা তো বাবা ডেস্ক্রাইব করেছেন লেখায়। এদিকে বাবার যতোগুলো ইলাসট্রেশন আছে তাতে ট্রিগার, গ্রিপ এসব দেখা যায়। কিন্তু সেটা সে বিদেশে নিয়ে যাবে কী করে?

কল্পবিশ্ব: হ্যাঁ, অ্যানাইহিলিন কে তো পিস্তল হিসেবে বলা আছে।

সন্দীপ রায়: ভাবো ইমিডিয়েট এক্সরে তে ধরবে আর তাতে নানারকম ফ্যাকড়া হবে। লজিক্যালি গল্পের কথা ভাবলেও তো শঙ্কু নিজেই আটকে পড়বেন। তার জন্য স্পেশাল পারমিশান, অনেক ঝামেলা। যে কারণে আমরা একটু অন্যরকম দেখতে করেছি এটাকে। কিন্তু আমরা দুরকম মডেল তৈরি করেছিলাম এর জন্য। একটা একটু ডায়াবেটিক পেশেন্টদের ইঞ্জেকশনের মতো দেখতে…

কল্পবিশ্ব: ইনসুলিন পেন এর মতো?

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ, প্রায় তাই যেটা মাঝখান থেকে খুলে যায়। একটা বাটনের মতো রয়েছে, নট আ ট্রিগার। যেটা একটা মেডিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট হিসেবে হয়তো চলে যেতে পারে। এটা কিন্তু অনেকে আপত্তি তুলবে, আমি রেডি হয়ে আছি তার জন্য… মানে এটা কেন হল? ওটা তো উনি বন্দুক দেখিয়েছেন। আমরা দুটো মডেল করেছিলাম যে দুটোকেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ব্রেজিলে। একটা ধাতুর তৈরি, আরেকটা প্লাস্টিকের, খুব ইন্টারেস্টিং দেখতে!! সেই ধরল ওটাকে। দেখো মেডিকেল ইনস্ট্রুমেন্ট যার ট্রিগার, হ্যান্ডেল, গ্রিপ কিছুই নেই। ঠিক ধরে ফেলল। তারপর আমাদের অ্যাসিস্ট্যান্ট মানে আর্ট ডিপার্মেন্ট এর একজনকে ডেকে পাঠাতে হল। সে গেল সেখানে।

কল্পবিশ্ব: সে গিয়ে এক্সপ্লেইন করল?

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ, কিন্তু ওরা শুনেই বলল শঙ্কু!! ও আচ্ছা!! তারপর সব ঠিক হয়ে গেল। আসলে কলকাতা বলে শঙ্কুর একটা পরিচিতি আছে তাই পার পেয়ে গেল কিন্তু বোম্বেতে কি হত সেটা জানি না। তারপর সেটার পার্টসগুলোকে আবার খুলে খুলে রাখা এদিকে ফ্লাইট ডিলে হয়ে গেল। কাজেই আমরা একটু লিবার্টিস নিয়েছি এই একটা ব্যাপারে। আমার প্রথমে একটু অস্বস্তিই হয়েছিল কারণ বাবা এতো সুন্দর সব ইলাস্ট্রেশন করে গেছেন।

কল্পবিশ্ব: বর্ণনাও আছে, ওই তাগ করে ঘোড়া টিপে দিলেই নিশ্চিহ্ন!! আর একটা প্রশ্ন জাগছে যে অ্যানাইহিলিনের ব্যবহার কী রকম? মানে সেটাতেও তো কয়েক রকম বর্ণনা আছে।

সন্দীপ রায়: একটা তো সেই মিহি সিসের মতো হয়ে যাওয়া সেরকম বর্ণনা আছে যে ওইভাবে প্রাণী নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। সেসব তো পরে হবে। কিন্তু আমাদের ওই বেসিক ডিজাইন নিয়ে একটা প্রব্লেম দেখা দিল। যা-ই হোক…

কল্পবিশ্ব: আর ওটা তো আপনাকে আউটডোরেই ব্যাবহার করতে হবে। আচ্ছা টাইটেল কার্ডগুলো নিয়ে কী ভেবেছেন?

সন্দীপ রায়: না দাঁড়াও আগে ছবিটা শেষ করি তারপর টাইটেল নিয়ে ভাবনাচিন্তা হবে। তবে একটা ভালো ব্যাপার যে আমরা ক্রুটা ভীষণ ভালো পেয়েছি। সকলে গল্পটা পড়ে এক্সাইটেড। ওখানে যারা ইংরেজী জানত তাদের অনেকে এমনকি অ্যামাজনে বসেই অ্যামাজন ডট কমে গিয়ে শঙ্কুর বই অর্ডার দিয়েছে… (সমস্বরে হেসে ওঠা)। বিশেষ করে দুজন এসেছিলেন আমেরিকা থেকে। যিনি লোবো সেজেছিলেন, তিনি সান্টা ক্লারাতে থাকেন। তিনি পড়ে বললেন আচ্ছা এই গল্প কি আর আছে, ইংরেজীতে? ও ইমিডিয়েটলি নেটে অ্যামাজন দেখে নিল কী কী গল্প আর আছে? আমাকে বলল কোনটা পড়ব? আমি বলে দিলাম একটা দুটো সঙ্গে সঙ্গে অর্ডার দিয়ে দিল। এ ছাড়া ইনস্টিটিউটের কর্ণধার যিনি তাকে আমরা মহিলা করেছি। একজন বয়স্কা, ডিগ্নিফায়েড মহিলা। তা তিনি আবার লস অ্যাঞ্জেলসের টেলিভিশনে কাজ করেন।

কল্পবিশ্ব: রাটানটান ইনস্টিটিউট কি ওই হোটেলেই শ্যুট করলেন?

সন্দীপ রায়: না ওটার এক্সটেরিয়রটা আমরা একটা কনভেনশন সেন্টারে শ্যুট করলাম। তারপর যেটা হবে সেটা হল ভিএফএক্স এ ওই কনভেনশন সেন্টারের নামটা চেঞ্জ করে দেওয়া, সেটা খুব ইজি কাজ। ভেতরটা অবশ্যই হোটেলে করা হবে। কারণ সব হোটেলেই এখন কনফারেন্স সেন্টার, ব্যাঙ্কোয়েট ইত্যাদি থাকে।

কল্পবিশ্ব: সেখানে একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার আছে। মানে শঙ্কুর দিক থেকেও আর সত্যজিৎ রায়ের দিক থেকেও। ওখানেই জীবনে প্রথমবার শ্যাম্পেন খাবে শঙ্কু।

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ অবশ্যই। ওই দৃশ্যটা এখনও তোলা হয়নি। তা ধৃতিদা শ্যাম্পেনটা হয়তো না জিজ্ঞেস করেই খেয়ে নেবেন, সেটা আমরা করতে দেব না… (সবাই হেসে ওঠে)।

কল্পবিশ্ব: আচ্ছা ওখানে যে ক্যানু করে খাঁড়িগুলোর মধ্যে দিয়ে যাওয়ার বর্ণনা আছে, সেটা কি দেখান হবে?

সন্দীপ রায়: না সেটা সম্ভব হবে না জানো। মানে আমরা অনেকগুলো জিনিস দেখে বুঝলাম যে এতগুলো লোককে ধরার জন্য অনেকগুলো ক্যানু লাগবে। প্লাস দুজন ইন্ডিয়ান, যারা রসদ নিয়ে যাচ্ছে। আর ক্যানুতে কাজ করা ডেঞ্জারাসও বটে। 

কল্পবিশ্ব: শ্যুট করার জন্য?

সন্দীপ রায়: না শুধু শ্যুট করার জন্য না। এখন তো শ্যুট করাটা কোনও সমস্যা না। এত রকম হালকা ক্যামেরা বেরিয়ে গেছে। কিন্তু ক্যানুতে হাইটার, লোবো, দুজন ইন্ডিয়ান, শঙ্কু, সন্ডার্স, ক্রোল সবাই রয়েছে। একটা ক্যানুতে কিছুতেই সম্ভব না। তাই আমরা যেটা বাছলাম সেটা একটা ছোট্ট লঞ্চের মতো। কিছু কিছু লঞ্চ আবার লো ওয়াটারে যেতে পারে না। তাই আমরা একটা পুরানো টাইপের মজবুত কাঠের লঞ্চ পেলাম বেশ ভালো। এখন যা হয়, সব লঞ্চের ওপরটা ঢাকা। কারণ ওপর দিয়ে নানারকম জিনিস পড়তে পারে। তাই ওপরটা ঢাকা আর সাইডটা খোলা।

কল্পবিশ্ব: আর হেলিকপ্টার?

সন্দীপ রায়: হেলিকপ্টার ওখানে নট অ্যালাউড। মানে এত ঘন জঙ্গল যে নামতে পারবে না। কাজেই সব কিছু সী-প্লেন। মানে গ্রাউন্ডেও চলে আবার জলেও চলে।

কল্পবিশ্ব: সী-প্লেন ব্যাপারটা তো বেশ ইন্টারেস্টিং হবে।

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ, আসলে ওখানে করাটা অনেক সোজা, এখানে অনেক নিয়মকানুন। যেমন একটা শ্যুট যেটা করা গেল না এয়ারপোর্টে, কিছুটা অসুস্থতার জন্যেও বটে। আমি ভেবেছিলাম এয়ারপোর্টে যখন শঙ্কু আসছে তখন ক্রোল সন্ডার্সের সাথে মিটিং হচ্ছে হ্যান্ডসেক করে।

কল্পবিশ্ব: তার তো একটা ছবিও আছে।

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ, নকুড় আবার বলছে ব্যাভেরিয়ানে অ্যাল্পসে সেই দুর্ঘটনার কথাটা। তা সেই সিনটার জন্য ওরা বলল যে চলো দু-তিনটে এয়ারপোর্ট আছে এখানে সেগুলো তোমায় দেখাই। তা তার মধ্যে থেকে একটা পছন্দ হল বেশ জমজমাট একটা এয়ারপোর্ট। আর বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে দোকানপাট ইত্যাদি যা দেখে বোঝা যায় যে এটা কলকাতা এয়ারপোর্ট নয়। আমি জিজ্ঞাসা করলাম যে এখানে কি করা যায়? তা ওরা একজনকে ডেকে জিজ্ঞাসা করে জানাল যে হ্যাঁ করা যাবে, এতটাই সহজ পুরো ব্যাপারটা। ভাবো!! তারপরে আমরা একটা হ্যাঙ্গারে গেলাম। আমার আসলে দুটো প্লেনের দরকার ছিল। একটা প্রপার স্মল চার্টার, যেখানে হাইটার নিয়ে যাচ্ছে। আরেকটা হল সী-প্লেন যেটায় সলোমন নকুড়দের নিয়ে বেরোবে এল ডোরাডো দেখাতে। তা ওই হ্যাঙ্গারে গিয়ে একটা সী-প্লেন দেখাল আর সেটা বেশ পছন্দ হয়ে গেল আমার। ওরা বলল চলবে? আমি বললাম হবে। ব্যাস ডান, হয়ে গেল। আমি বললাম আর একটা চাই। ওরা তখন পাশের হ্যাঙ্গারে নিয়ে গেল। যেমন চাইছিলাম তেমনি সেভেন এইট সিটারের একটা প্লেন পেয়ে গেলাম। আবার ডান হয়ে গেল। এত সহজে। এটাই হচ্ছে তফাৎ। আর এখানে এয়ারপোর্টে শ্যুটিং করা এখন কি যে ঝক্কির!!

কল্পবিশ্ব: আমাজনে আপনারা বন্য জন্তু জানোয়ারের সামনে পড়েছিলেন কি?

সন্দীপ রায়: না না। সেরকমভাবে বন্য জন্তু জানোয়ার কিছু দেখা যায় না। আমাদের হোটেলেই একটা প্রাইভেট জু ছিল যেখানে জাগুয়ার, ম্যাকাও, নানারকম বাঁদর ইত্যাদি ছিল। আমাদের ওদের জিজ্ঞাসাও করেছিলাম। ওরা বলল না না সেসব এখানে নেই।

কল্পবিশ্ব: অ্যামাজন শুনলেই এখনও আমাদের মনে হয় যে রেন ফরেস্টের সব জন্তু জানোয়ার।

সন্দীপ রায়: না না সেরকম কিছু নয়। কিছু পোকামাকড় রয়েছে অবশ্য। আমরা সবাই ইয়েলো ফিভার ভ্যাক্সিনেশন নিয়ে গিয়েছিলাম। তবে কিছুই হয়নি, একটু বাড়িয়েও বলে লোকে।

কল্পবিশ্ব: আসলে বেশিরভাগ ওই গল্পগুলো পড়ে যে ধারণাগুলো হয়েছে সেই ছবিটাই গেঁথে আছে আমাদের মনে। এদিকে সেই পরিবেশ বদলে গেছে অনেকদিন হল।

সন্দীপ রায়: ওখানে সবচেয়ে অদ্ভুত লেগেছে ইউনিটটা। মানে আমাদের ইউনিটও খুব ভালো। কিন্তু ওরা ওখানে জঙ্গলে এত সব লটবহর নিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কোনও ক্লান্তি নেই, কমপ্লেইন নেই। এদিকে বিশাল বিশাল ট্রলি, ট্র্যাক নিয়ে যাচ্ছে। তারপর ওখানে গিয়ে যখন ক্যাম্প হয়ে গেল তখন আবার চারিপাশে রান্নার ব্যবস্থা করা মানে গ্রিলড হচ্ছে। আর চা, কতরকমের চা তুমি চাও!! তারপর ব্রেজিলের কফি তো বিখ্যাত। সেই কফি, কেক, বিস্কিট। মানে খাওয়াটা বেশি শ্যুটিং এর থেকে। কনস্ট্যান্টলি কিছু না কিছু আসছে। তবে যাই খাও প্রপার বিন আছে সেখানেই ফেলতে হবে। এটা একেবারে করতেই হবে। আর তুমি যখন শ্যুটিং শেষ করে বেরিয়ে আসছো, তখন সব কালেক্ট করে নিয়ে আসতে হবে। সব ঝকঝক করবে, কোথাও কিচ্ছু পড়ে থাকবে না।

কল্পবিশ্ব: ভার্নার হের্জগ এর মেমোয়ার্সে পড়েছিলাম যে ‘ফ্রিৎসক্যারাল্ডো’ আর তারও আগে ‘অ্যাগুয়ার দ্য রথ অব গড’ এ ওখানে হাই-টাইড বা লো-টাইড এ কি ঝামেলা হয়েছিল শ্যুটিং এর সময়। 

সন্দীপ রায়: শুধু হাই-টাইড, লো-টাইড না। দেখো একচুয়ালি শঙ্কুর এই গল্পটা কিন্তু প্রপার অ্যামাজন নয়। এটা তো  অ্যামাজনের নীচে। মানাওস থেকে মেইন অ্যামাজনে যেতে হয়। তা গল্পে যে বর্ণনা আছে সেটা আমরা পেয়েছি। তবে বাবা যে বলেছিলেন নানারকম পাখি সেটা কিন্তু নেই। সেটা অনেক দূরে।

কল্পবিশ্ব: আপনারা যেখানে শ্যুট করেছিলেন সেই জায়গাটা কি ট্যুরিস্টদের জন্য অ্যালাউড?

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ, তবে যাওয়াটা একটু ডিফিক্যাল্ট। আর বৃষ্টি যখন আসে তখন সেটা এত সাডেন আর ফেরোশাসলি  আসে যে তখন রিও নেগ্রো প্রায় সমুদ্র। আমরা তেমন একটা বিরাট ঝড়ে পড়েছিলাম, তখন আমরা ক্যানুতে। এদিকে বিরাট বিরাট ঢেউ আসছে। আমি ভাবলাম ঠিক আছে মরলে মরব শঙ্কু করতে গিয়ে, সেটা একটা ভালো ব্যাপার হবে। তবে পুরো ব্যাপারটা খুবই ডেঞ্জারাস। যা-ই হোক যে ক্যামেরাটা ম্যানুভার করছিল সে খুব এক্সপার্ট তাই আমরা আমাদের নৌকায় গিয়ে পৌঁছতে পারলাম। কিন্তু এতে হল কি ধৃতিদা ভিজে আরও শরীর খারাপ বাধিয়ে ফেললেন। আর সেখান থেকে আমাদের যেতে লাগবে আড়াই ঘণ্টা। আর আমরা যে বোটে উঠেছিলাম সেখানে কোনও কস্ট্যুম নেই। কাজেই ওই ভিজে কাপড়েই আমাদের যেতে হল, সেই কাপড় গায়েই শুকোল। তবে যা-ই হোক, সব মিলিয়ে দারুণ এনজয় করেছি। সাও পাওলোতেও যেতে হয়েছিল আমাদের। সেখানে ট্রাফিক আমাদের কলকাতার প্রায় দশগুণ। যে কারণে এবার আমাদের নতুন করে শেড্যুল করতে হবে, প্রায় ঘন্টা তিন-চারেক বেশি সময় রাখতে হবে হাতে। আর সিকিউরিটি থাকতে হবে কারণ বেশ আনসেফ জায়গা। তা আমরা সাও পাওলোতে একটা জায়গা বাছলাম যেখানে পার্ক, ক্যাথিড্রাল এসব আছে বেশ সাজানো গোছানো আর ওখানে খুব ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল ওয়াল গ্রাফিতি। ওই লোবো শঙ্কুদের শহর ঘুরে দেখাচ্ছে ওই সিকোয়েন্সটার জন্য। তা আমরা লাইন প্রোডিউসারকে বলে এলাম যে পরেরবার যখন আসব তখন এই জায়গাটায় একটা সিনের শ্যুটিং করতে চাই। তিনি বললেন যে খুব বিপদে ফেললেন কারণ এটা পকেটমারদের জায়গা আর ড্রাগ-অ্যাডিক্টস ভর্তি।

রায় বাড়ির সেই বিখ্যাত বারান্দায় আমরা তিনজন (বাঁদিক থেকে সন্দীপন, দীপ আর অরুণাভ)

কল্পবিশ্ব: ‘সিটি অব গড’ ছবিতে রিও’র এমন একটা চেহারা দেখেছিলাম।

সন্দীপ রায়: রিওটা আরও আনসেফ। ওরাই বলল যে এটা কি দেখছ রিওতে গেলে তুমি মার্কড হবেই। তবে এই শহরগুলোতে লোক্যাল ফ্লেভারের সঙ্গে সঙ্গে একটা ইউরোপিয়ান ফ্লেভারও রয়েছে। তাই বেশ ইন্টারেস্টিং ও বটে। ওই পাড়ায় পাড়ায় একটা করে ছোট্ট বইয়ের দোকান যেটা ইউরোপে বেশ দেখা যায়।

কল্পবিশ্ব: আর এই কসমস ম্যাগাজিন এগুলো কি আপনিই ডিজাইন করলেন।

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ, এই ব্যাপারে সৌরদীপ আছে, ওর এক বন্ধু আছে যে গ্রাফিক ডিজাইনার আর লে-আউট আর্টিস্ট। আমরা একটু অন্যরকমভাবে ভেবেছি। আনফরচুনেটলি এক্সিবিশনটা এখনও শ্যুট করা হয়নি ওই অসুস্থতার জন্য কিন্তু আমরা সব ব্ল্যু প্রিন্ট রেডি করে নিয়ে গিয়েছিলাম।

কল্পবিশ্ব: হ্যাঁ, এক্সিবিশনে তো শঙ্কুর সব আবিষ্কারগুলো দেখান হবে।

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ, শঙ্কুর আবিষ্কারগুলো, এ ছাড়া বেসিক নোটস্‌। এ ছাড়া আমরা প্ল্যান করেছি যে দু-তিনটে মনিটার জুড়ে ওর একটা সিভি দেখানো হতে থাকবে। কারণ দু হাজার ষোল এখন তো নানা অডিও ভিস্যুয়াল ব্যাপার থাকেই। যা-ই হোক সেসব সেকেন্ড ফেজে হবে। তখন অবশ্য জঙ্গলের ব্যাপারটা কমে গেল। ওই ফেজে দু-দিনের জন্য জঙ্গলের কাজ বাকি থাকল, বাকীটা শহরকেন্দ্রিক।

কল্পবিশ্ব: আচ্ছা শঙ্কু কি মডার্ণ গ্যাজেট ব্যবহার করবেন মানে কম্পিউটার ইত্যাদি গোছের কিছু?

সন্দীপ রায়: কম্পিউটার তো করতেই পারেন, যদিও সেটা আমি দেখাইনি। তবে কিছু কিছু জিনিস করা হয়েছে সেটা আমি এখন বলব না। এখনকার টেকনোলজির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কিছু জিনিস যেটা মনে হবে শঙ্কুরই আবিষ্কার।

কল্পবিশ্ব: আর জেরক্স ব্যাপারটা …

সন্দীপ রায়: হ্যাঁ সেটা লোবো যেন স্ক্যান করছে। এখন তো মোবাইলে তুলেই দেয়া যায়। যা-ই হোক দেখান হচ্ছে যে ও একটু প্রপারলি তুলে দিতে চায়। কারণ ওরই তো ইনস্টিটিউট আর ঘুষ দেবার ব্যাপারটা ব্রেজিলে ভীষণ অ্যাপ্রোপ্রিয়েট। তবে ওখানকার টিমটা খুব এক্সাইটেড।

কল্পবিশ্ব: ওখানে কি রিলিজ করার কোনও প্ল্যান আছে আপনার?

সন্দীপ রায়: ওরা ভীষণভাবে বলছে যে তুমি এখানে একটা প্রিমিয়ার করো। তবে সাও পাওলোর যিনি লাইন প্রোডিউসার তিনি হলিউডের প্রচুর ছবি করেছেন। আবার হেক্টর ব্যাবেঙ্কোর সাথে কাজ করেছেন ‘কিস অফ দ্য স্পাইডার উওম্যান’ ছবিতে। হলিউডের বড়ো বড়ো নাম যেমন আল প্যাচিনো, রবার্ট ডি নিরো এদের ছবিতেও লাইন প্রোডিউসারের কাজ করেছেন। উনি বললেন যে আমার লাইব্রেরিতে ‘অপু ট্রিলোজি’ আছে। ক্রাইটেরিয়ানের যেটা বেরিয়েছে। তিনিও উৎসাহ দিলেন।

কল্পবিশ্ব: মানে ব্রেজিল থেকে বাংলা আমরা সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি এর জন্য। একটা দুর্দান্ত অভিজ্ঞতার জন্য। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আজকে আমাদের সময় দেবার জন্য। একটা দুর্দান্ত সন্ধেবেলা আমরা কাটিয়ে গেলাম। শঙ্কুকে নিয়ে আমাদের নস্ট্যালজিয়াগুলো আবার জেগে উঠল আজ।

*********************

Tags: ইন্টারভিউ, তৃতীয় বর্ষ চতুর্থ সংখ্যা, তৃষা আঢ‍্য, দীপ ঘোষ, বিশেষ আকর্ষণ, সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায়

4 thoughts on “কল্পবিশ্ব আর এল-ডোরাডো’র কথামালা

  • January 28, 2019 at 8:49 pm
    Permalink

    খুব ভালো লাগলো। প্রায় এক নিঃশ্বাসে পড়লাম।।স্মৃতি,সত্ত্বা ভবিষ্যৎ মানিকময়,শঙ্কু ময়।।

    ডিসেম্বর এর জন্য অধীর আগ্রহ

    Reply
  • February 5, 2019 at 10:37 am
    Permalink

    দুর্দান্ত। শঙ্কু ও এল ডোরাডোর জন্য অধীরের আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকবো। সন্দীপ রায়ের জন্য ভালোবাসা।

    Reply
  • February 9, 2019 at 12:57 am
    Permalink

    অপেক্ষায় রইলাম , ছবিটা আশা করি আশাহত করবে না

    Reply
  • May 3, 2022 at 9:56 pm
    Permalink

    আজ ৩রা মে, ২০২২, ‘শঙ্কু ও এল ডোরাডো’ ছবি মুক্তির পর বেশ কয়েক বছর কেটে গেছে। চলচ্চিত্রটি মন জয় করে নিয়েছিল। সীমিত সামর্থ্য সত্ত্বেও অপরিমেয় উদ‍্যোম আর যত্নশীলতাকে পুঁজি করে সন্দীপ রায় একটা দুর্দান্ত ছবি উপহার দিয়েছেন আমাদের। সেই ছবি নির্মাণের খুঁটিনাটি নানান ঘটনা জেনে অভিভূত হলাম।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: Content is protected !!