তেলেভাজার একদিন

  • লেখক: রাজকুমার রায়চৌধুরী
  • শিল্পী: দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য (চিত্রচোর)

দিনটা শুরু হয়েছিল সাধারণ ভাবেই। আমি হাতিবাগানের সামনে হাঁটছি এখানে একটা কাজ ছিল৷ থাকি দক্ষিণ কলকাতায়৷ শ্যামবাজারের মোড়ে গেলেই মেট্রো পেয়ে যাব হঠাৎ খেয়াল করলাম রাস্তায় যত লোক জন দেখছি কারুর হাতে মোবাইল নেই কি সন্দেহ হল আশে পাশের দোকানগুলোর দিকে চেয়ে দেখলামযা সন্দেহ করেছিলাম তাইএকটা চায়ের দোকান দেখলাম বহুবছর আগে উঠে যাওয়ার কথাএখনো সে চা বিক্রি করছে আবছা যেটুকু স্মৃতি ভেসে আসছে তাতে মনে হল চল্লিশ বছর আগের হাতিবাগানকে দেখছিএকটা শাড়ীর দোকানের সামনে আয়না ছিল এখনো সেই আয়নাটাই আছে!

     না, আমি কিন্তু সেই যৌবনের আমিতে ফিরে যাই নি; আমি ২০১৭ সালের আমি চল্লিশ বছর আগে এই অঞ্চলেই ছিল আমাদের বাড়িভাই বোন বাবা মা সবাই মিলে থাকতাম৷ এখন হঠাৎ ভয় হলো, আমার নিজের বাড়িতে ফিরে গেলে তো কেউ বিশ্বাস করবে না এই আমি সেই ৪০ বছর আগের আমিআমার এক দাদা আর দুই বোন মারা গেছে এখন কি গেলে তাদের দেখতে পাব! ভেবেই গা ছম ছম করতে লাগল বন্ধুবান্ধব আত্মীয়স্বজন সম্পর্কে একই ব্যাপার ঘটবে কারুর পুরোনো ফোন নম্বর জানি না; মোবাইল অকেজোপকেটে নতুন দুহাজার আর পাঁচশো টাকার নোট খেলনার মতবাঁচবো কি করে! যত টাইম ট্রাভেলের গল্প পড়েছি বা সিনেমা দেখেছি, কোথাও এই সমস্যার কথা আছে কি না মনে পড়ছে না পকেটে কয়েক হাজার টাকা আর দুটো ডেবিট কার্ড থাকলেও অনাহারে মরতে হবে হাতিবাগানের কাছেই রাস্তার ধারে একটা লোক খবরের কাগজ বিক্রি করত কিছুটা এগিয়ে গিয়ে দোকানটা দেখতে পেলামএকটা ইংরেজী কাগজ তুলে প্রথম পাতায় তারিখটা দেখলাম, ২৩শে জানুয়ারি ১৯৭৫, মানে চল্লিশ নয় বিয়াল্লিশ বছর আগে ফিরে গেছি

     আজ ২৩শে জানুয়ারি, নেতাজীর জন্মদিনতক্ষুণি মনে পড়ে গেল লক্ষীনারায়ণ সাউর তেলেভাজার দোকানের কথানেতাজীর একান্ত ভক্ত এই পরিবার আজ সারা দিন ফ্রী তেলেভাজা দেবে স্কুলে পড়ার সময় এই দিনে প্রতি বছর আসতাম তেলেভাজার লোভেহাতিবাগান থেকে পাঁচ মিনিট হাঁটা সাউর দোকানের সামনে লাইন দিলাম৷ বেশীক্ষণ দাঁড়াতে হল নাদশ মিনিটের মধ্যেই দুটো আলুর চপ আর একটা বেগুনি পেলাম খাবার পর রাস্তার কলের জল খেয়ে প্রাণে শান্তি এল৷ জল খেয়ে মুখ মুছছি হঠাৎ পিছন থেকে এক কণ্ঠস্বর “আঙ্কল, পিছন ফিরে দেখি একটি বারো কি তেরো বছরের ছেলেখুবই বুদ্ধিদীপ্ত চেহারাভদ্র ও বটেনইলে আমাকে দাদু বলে ডাকতে পারতো

     কি চাই ভাই?”, আঙ্কল, তোমার হাতে যে যন্ত্রটা দেখলাম ওটা কি ফোন? আমি তেলেভাজার দোকানে লাইনে দাঁড়ানোর সময় অন্যমনস্ক ভাবে মোবাইলটা নিয়ে খুটখাট করছিলাম না মোবাইল এখনো আইনস্টাইনকে ধরতে পারেনি নিমেষের মধ্যে কলকাতা থেকে আমেরিকাতে কাউকে ফোন বা এমন কি ভিডিয়ো চ্যাট করা সম্ভব করেছে, কিন্তু সময়ের গন্ডি পেরোতে পারেনি হয়ত একদিন পারবেকিন্তু আমার মোবাইলে যে সব ছবি সেভ করা ছিল সব উধাও হয়ে গেছেআমার খুব আশ্চর্য লাগলো নাছবিগুলো থাকলে ১৯৭৫ আর ২০১৭ এর মধ্যে একটা যোগাযোগ থাকত, সেটা এখন বোধহয় আর সম্ভব নয়৷ যাই হোক, ছেলেটিকে বললাম, তুমি কি করে বুঝলে?

     বাবা এরকম ফোনের কথা একদিন আমায় বলছিলেন তোমার বাবা কি করেন?

     বাবা ইলেকট্রিকাল ইনজিনিয়ার; চলুন না আঙ্কল আমাদের বাড়িতে বাবা আপনার ফোন দেখলে খুব খুশি হবেন

     কিন্তু তোমার বাবা তো আমায় চেনেন না! কে একটা উটকো লোক ভাববেন

     না আঙ্কল, আপনাকে দেখে তো প্রফেসর বলে মনে হয়, বাবা কিছু মনে করবেন না এরপর আমাকে প্রায় হিড় হিড় করে টেনে নিয়ে গেল বাড়িতে৷

     তোমার নাম কি?

     ডাক নাম বাবুই, ভালো নাম অর্ক বসু মজুমদার

     আঙ্কল, বাবাকে প্লিস বলোনা আমি তেলেভাজা খেয়েছি

     কেন তোমার বাবা কি খুব রাগী?

     না, বাবা খুব ভাল কিন্তু তেলেভাজা খেতে আমায় বারণ করেছেনআমার না তেলেভাজা খেতে খুব ভাল লাগে

     আমিও তোমার দলে তবে তোমার বাবা ঠিকই বলেছেনতেলেভাজা বেশি খাওয়া উচিত নয়৷আমার কথা শুনে বাবুই খুশীই হোল

     বাবুইদের বাড়ি তেলেভাজার দোকান থেকে সাত আট মিনিটের হাঁটা পথ৷ এই গলিতে আমার এক স্কুলের বন্ধু থাকত বাবুইদের বাড়িটা দোতলা পুরোনো উত্তর কলকাতার টিপিকাল বাড়ি, বাইরের গেট খুললে খানিকটা ফাঁকা জায়গাবাঁদিকে একটা ছোট বাগান, উত্তর কলকাতার বাড়িতে যা সচরার দেখা যায় না৷ গোলাপ, গাঁদা, জবা আরো কতকগুলি ফুলের গাছ আছে যাদের নাম মনে করতে পারলাম না৷ তবে বাগানটির নিয়মিত পরিচর্যা হয় দেখেই বোঝা যায় ইতিমধ্যে বাবুই এর কাছে অনেক কথা জানতে পারলামছুটির দিনে ও টুকাইদের বাড়িতে টেবিল টেনিস খেলতে যায়ওর বাবা খুব ভালো টেনিস খেলতেন বাড়িতে গেলে দেখতে পাব ওর বাবা কত কাপ আর মেডাল পেয়েছেন বাড়ির দরজা খোলাই ছিলভিতরে ড্রয়িংরুমে একটা বেতের চেয়ারে বসে এক ভদ্রলোক খবর কাগজ পড়ছিলেন৷ আমাকে দেখে বারে বেরিয়ে এলেন৷ আমি আমার নাম বললাম,দেখুন কিছু মনে করবেন না আপনি বোধ হয় বাবুই এর বাবা, ওই আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে” “বাবা আঙ্কলের কাছে না একটা দারুণ ফোন আছে বাবুই এর কথা শুনে ওর দিকে চেয়ে ভদ্রলোক আস্তে করে বললেন তুমি তোমার ঘরে যাও, আঙ্কলের সঙ্গে আমি কথা বলছি

     বাবুই খানিকটা হতাশ হয়েই চলে গেলতবে পিতৃভক্ত ছেলে আপত্তি জানাল না বাবুই র বাবা একটা বেতের চেয়ারে আমাকে বসতে বলে নিজে একটা বেতের সোফার এক ধারে বসলেনবসবার ঘরটা খুব একটা বড় নয়বেতের সোফা, চেয়ার ছাড়া একটা কাঠের টেবিল আর চেয়ারটেবিলের উপরে একটা পুরোনো দিনের বড় রেডিয়ো৷ দেয়ালে কতকগুলি ফটোগ্রাফ বেশীরভাগই নিসর্গ দৃশ্যেরদুটি যামিনী রায়ের ছবি আসল কি প্রতিলিপি বুঝতে পারলাম না

     বাবুই র বাবার দোহারা চেহারা রং ফর্সার দিকেই হাইট মনে হয় পাঁচ নয় এর কাছাকাছি৷ বয়স পঞ্চাশের মত হবে বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা বাবুই এর কাছ থেকে ওনার নাম শুনেছি অমিতাভ বসু মজুমদার৷ আমার নাম ছাড়া কি পরিচয় দেব এমন কি এই নাম যে আমার নাম তারও নথিপত্র আমার কাছে নেই উনি একটা বেতের চেয়ারে আমাকে বসতে বলে নিজে একটি সোফায় আমার মুখোমুখি বসে আমার মোবাইলটা দেখতে চাইলেন৷ মোবাইলটা উল্টেপাল্টে ভাল করে দেখে বললেন এই মোবাইল আপনি কোথায় পেলেন? এই প্রযুক্তি বাজারে আসতে এখনো তিরিশ চল্লিশ বছর লাগবে

     আমি বললাম সে আর এক গল্প আপনি এক বর্ণও বিশ্বাস করবেন না

     তাও বলুন না আমি হাতিবাগান থেকে যা যা ঘটেছে সব বললাম, তবে বাবুই এর সঙ্গে যে তেলেভাজার লাইনে দেখা, সেটা চেপে গেলাম আমার কথা শোনার পর অমিতাভ বাবু খানিকক্ষণ চুপ করে রইলেনতারপর বললেন,আপনার মোবাইল আর ঘড়িটা না দেখলে আমি আপনার একটাও কথা বিশ্বাস করতাম না ঘড়ি শুনে আমার মনে হল, তাইতো যে ঘড়ি আমি পড়ে আছি এটাও স্মার্ট ঘড়ি সময় দেখা ছাড়াও মোবাইল ক্যামেরা রেডিও সব কিছুই এতে পাওয়া যায়

     আচ্ছা ঠিক কোন সময় আপনার মনে হল আপনি চল্লিশ বছর আগে আপনি ফিরে এসেছেন?

     দেখুন এখন মনে হচ্ছে হাতিবাগানের আগেই আমার এটা খেয়াল করা উচিত ছিলরূপবানীর কাছে আসতেই আমার মাথায় একটা শক টের পাইতখন সেই পুরোনো রূপবানী আর স্টার থিয়েটার দেখেই বোঝা উচিত ছিলএখনকার স্টার থিয়েটার আগুন লেগে সম্পূর্ণ পুড়ে যায় নতুন আধুনিক স্টার থিয়েটারে একতলায় একটা অংশে নাম করা একটা রেস্তোরাঁ হয়েছে আর অন্য অংশে আধুনিক সিনেমা হলশুনছি একটা শপিং মল ও হবে

     আচ্ছা আপনি তো বললেন এই অঞ্চল আপনার চেনা কারণ এখানেই আপনার বাড়ি ওই বাড়িতে আপনার জন্য হয়ত বাড়ির লোক অপেক্ষা করছে কিছুক্ষনের জন্য আপনি বারে আছেন; যত রাতই হোক ঠিক ফিরে আসবেন আমি জানি আপনাকে কেউ চিনতে পারবে নাকিন্তু এটাতো বলতে পারবে যে আপনার নামে একজন ও বাড়িতে থাকে৷ এটা ও তো আপনার একটা পরিচিতি

     ওনার কথা শুনে আমি বললাম, ওখানেই তো মুস্কিল!

     কেন?”

     ঘটনাচক্রে আমি এমন একটা সময়ে এসে পৌঁছেছি, যখন আমি বাবা মার সঙ্গে থাকতাম না তাছাড়া আমার বাবা কলকাতার বাড়ি ছেড়ে উত্তরপাড়ায় বাড়ি তৈরী করে ওখানেই থাকেন আমার ভাই বোনেরাও ওখানে থাকে, মানে ১৯৭৫ সালে থাকত

     আপনি কোথায় থাকতেন?

     আমি বালিগঞ্জের কাছে একটা হোটেলে থাকতামপেয়িং গেস্টের মত কিন্তু আমার এখন কিছুই মনে নেই তখন একটা সরকারী কলেজে সবে জয়েন করেছিযাতায়াতের সুবিধে হত

     আপনার সাবজেক্ট কি ছিল? আমি বললাম আমার MSc ফলিত গণিত হলেও পি এই ডি ফিজিক্সে

     এরপর অমিতাভ বাবু আমাকে নানা প্রশ্ন করতে লাগলেন বেশিরভাগই বিজ্ঞান ও কমপিউটার সম্পর্কে হিগস বোসন ২০১৩ সালে পরীক্ষাগারে আবিষ্কৃত হয়েছে শুনে বললেন যে, অংক কষে তো আগেই বিজ্ঞানীরা এর অস্তিত্বের কথা ঘোষণা করেছিলেন, কিন্তু এতদিন লাগল একে খুঁজতে আমি বললাম এর আগে এত শক্তিশালী accelerator তৈরী করা যায় নি৷ এর পর ফিফথ জেনারেশন কমপিউটার ডেস্কটপ, ল্যাপটপ আইপ্যাড ইত্যাদির কথা খুব মন দিয়ে শুনলেন৷ তবে মনে হল উনি জানতেন এগুলি আবিষ্কার হবে শুধু সময়ের অপেক্ষা

     বললেন উনি হয়তো সব দেখে যেতে পারবে না, তবে বাবুই পারবে আমি বুঝতে পারছিলাম এ সমস্ত আবিষ্কার আর প্রযুক্তির আলোচনা করে উনি খুব বুদ্ধিমানের মতো জানার চেষ্টা করছিলেন আমি ইম্পস্টার কিনাআমার কয়েকটি পেপার ১৯৭৫ সালের মধ্যেই নামকরা ফিজিক্সের জার্ণালে ছাপা হয়েছে কিন্তু তাদের লেখক পদ্মনাভ চৌধুরী যে আমি, তা কি করে প্রমাণ করব! অমিতাভ বাবু বললেন,তাহলে আপনার কোন পরিচিতিই নেই৷ দেখুন টাইম ট্রাভেল এখনো কল্পবিজ্ঞানই ২০১৭ কেন আরো একশ বছরেও এটা শুধুই কল্পনাই থাকবে কিন্তু আপনা মোবাইল, ঘড়ি, নতুন দুহাজার টাকার নোট আর ডেবিট কার্ড দেখে খটকা লাগছে কিন্তু এখন আপনি কি করবেন?

     আমি বললাম বড়বাজারে একটা মুটের চাকরী পেলেও নেব ভাবছিওখানে কোন পরিচয় পত্র লাগবেনা!

     আপনার যা বয়স আপনি ওই পরিশ্রম করতে পারবেন না তাছাড়া ওখানেও দেশওয়ালী ভাই না থাকলে ঢোকা শক্ত আপনি কি হায়ার সেকেন্ডারী লেভেলে ফিজিক্স আর অংক পড়াতে পারবেন?”

     তা পারবকিন্তু স্কুলে চাকরী দেবে কে?”

     না স্কুলে নয়একটা কোচিং ক্লাসে কোচিং ক্লাস যে চালায় আমার চেনা ওখানে যিনি আগে পড়াতেন তিনি একটা ভালো চাকরী পেয়ে ছেড়ে দিয়েছেনফুল টাইম জবআমি বললে আপনার পরিচয় পত্র লাগবে না মাইনে আপাতত মাসে দুশো টাকা পাবেনদুশো টাকা শুনে আমার মুখে হয়ত খানিকটা হতাশার ছাপ ফুটে উঠেছিল

     এখন কিন্তু প্রাইভেট স্কুলে এরকম মাইনেই দেয়এই নোবল প্রফেশনে যাঁরা আছেন তাঁরা আমাদের দেশে মুটে মজুরদের মতই মাইনে পান

     আমি বললাম আমি জানিআমি একটি অতি সাধারন প্রাইভেট স্কুলে পড়েছি টিউশনি না করলে টিচাররা খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারতেন না৷ ২০১৭ সালেও একই অবস্থাঅবশ্য যাঁরা সরকারী স্কুলে বা নামী দামী স্কুলে পড়ান তাঁদের অবস্থা স্বচ্ছলই বলা যায় আমি এই চাকরী নোব এছাড়া উপায় কি! মনে মনে ভাবলাম আমার পকেটে কোচিং ক্লাসের পাঁচ বছরের মাইনে আছে কিন্তু তা নামকে ওয়াস্তেএখন তার দাম কাণা কড়িও নয়

     অমিতাভ বাবু বললেন,আপনি হয়ত ভাবছেন এই টাকায় চালাবেন কি করে! বউবাজারে শ্রীগুরু নামে একটা মেস আছে, আপনি যদি একাই একটা ঘর নিয়ে থাকেন, খাওয়া থাকা সমেত একশো আশি টাকাহ্যাঁ, আর একটা কথা, আপনি সপ্তাহে দুদিন করে বাবুইকে পড়াবেন আমার ছেলে বলে বলছিনা, ও বেশ বুদ্ধিমান; ওর ক্লাসের পড়া ও নিজেই পারবে আপনি ওকে একটু হায়ার লেভেলে পড়াবেন আপনাকে আমি মাসে দুশো টাকা দেব

     আমি বললাম,বেশ আপনি যা বললেন তাই করব আবার ২০১৭ দেখার অনেক আগেই আমি পৃথিবী ছাড়ব এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেইতবে আপনাকে কয়েকটা কথা জিজ্ঞেস করব?”

     বলুন কি জানতে চান তা বুঝতে পারছি, তাও বলুন

     আমি বললাম, আপনি তো টাইম ট্রাভেল, এই সবে বিশ্বাস করেন নাতা হলে আমার জন্য এত করছেন কেন?

     আমার কথা শুনে অমিতাভ একটু হাসলেন,প্রথম কারণ আমার ছেলে ওর একটা দারুণ ক্ষমতা আছে৷ লোক চিনতে পারেওকে দেখে মনে হল ইতিমধ্যেই আপনার ভক্ত হয়ে গেছেও আপনাকে হয়ত অনেক গল্প করেছে নিশ্চয়?

     তা করেছে

     কিন্তু ওর মার কথা বলেছে কি?

     না তা বলেনি

     পাঁচ বছর আগে ও মাকে হারায় আমার এক দূর সম্পর্কের পিসী আমাদের এখানে থাকেনউনিই ওর দেখাশুনো করেনঅবশ্য রাতদিনের একটা কাজের মেয়ে আছেআমাকে কাজের জন্য মাঝে মাঝেই বারে যেতে হয়ফিরে এলে আমাকে ছাড়তে চায়নাওর মনে নানা প্রশ্ন৷ আমার সঙ্গেই বকবক করে আমার পিসী খুব বেশী লেখা পড়া করেন নি, ওর বেশীর ভাগ কথা উনি বুঝতেই পারেন নাতবে পিসীকে ও খুব ভালবাসে

     আমি চুপ করে রইলামইতিমধ্যে কাজের মেয়েটি এক ট্রেতে করে কফি ও বিস্কুট নিয়ে এসেছে অমিতাভ বললেন,কফি খেয়ে নিন তার পর আপনার পরের প্রশ্ন শুনব৷”

     কফিতে শেষ চুমুক দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম,আপনি বললেন আমার মোবাইলটা খুব উন্নত ধরণের৷ তার মানে কি প্রিমিটিভ মোবাইল এখন বাজারে এসেছে? আমার যতদূর মনে হয় ১৯৭৫ সালে কোন মোবাইল আমি দেখিনি!

     আপনি ঠিকই বলেছেনতবে আমি যতদূর জানি চল্লিশের দশকেই মোবাইলের বেসিক টেকনোলজি আবিষ্কৃত হয় তবে মোটরোলা বলে এক কোম্পানী প্রথম মোবাইল তৈরী করে ১৯৭৩ সালেখুবই সীমিত ক্ষমতা ছিল তার তবে বাজারে আসতে আরো পাঁচছ বছর লাগবে তাও প্রথমে ইউরোপ আমেরিকায় আমাদের দেশে আসতে আরো সাত আট বছর লাগতে পারে!

     আমি অবাক হয়ে ভাবলাম উনি কি নিঁখুত ভবিষ্যতবানী করছেন ১৯৮২ তে ইটালিতে মোবাইলের ব্যবহার দেখেছিবাসে উঠেই লোকেরা, বিশেষ করে মহিলারা, ব্যাগ খুলে pronto দিয়ে শুরু করে অনর্গল কথা বলতো বোকার মত চেয়ে দেখতামআমাদের দেশে নব্বই দশকে এর ব্যবহা দেখিআমি প্রথম মোবাইল কিনি ১৯৯৭ তেতার পর তো হুহু করে মোবাইলের ব্যবহার শুরু হয় আমাকে চুপ করে থাকতে দেখে অমিতাভ বললেন,আপনি হয়ত ভাবছেন, আমি কি করে এসব ভবিষ্যবাণী করছি আমি যে আমেরিকান কোম্পানীতে কাজ করি সেই কোম্ণানী মোবাইল বানানোর চেষ্টা করছেআমি আর এন্ড ডি বিভাগের হেড আর আর একটা কথা, এখানে লাঞ্চ খেয়ে যাবেন আমার একটা মিটিং আছে তার সঙ্গে লাঞ্চও আছে আমি স্নান করেই বেরিয়ে যাববাবুই আপনাকে সঙ্গ দেবেআপনার মোবাইলটা ধার নিচ্ছি কাল ফেরৎ দেব আর দুশো টাকা রাখুনমেসে পনের দিনের আগাম টাকা চাইবে না এটা কোন দান নয় আপনাকে অ্যাডভানস দিচ্ছি মনে করুন

     তিন মাস হয়ে গেল শ্রীগুরু মেসে প্রথম প্রথম মনে হত মেসের বাসিন্দারা একেবারে সাড়ে চুয়াত্তর সিনেমা থেকে উঠে এসেছে পরে অবশ্য দেখলাম বেশীর ভাগই ছাপোষা মানুষ শুধু প্রাণকেষ্ট হালদার বলে এক ভদ্রলোক কমেডিয়ানের রোল টা নিয়েছেন নানা রকম জোকস ও মজার গান ওনার স্টকে আছেতবে লোকটা খারাপ নয় মেসের বাসিন্দারা কেউ বর্দ্ধমান, কেউ নৈহাটি, কেউ বা জয়নগর থেকে এসেছেন প্রায় সবাই শুক্রবার দেশের বাড়িতে চলে যান সোমবার কাক ভোরে বেড়িয়ে অফিস সেরে সন্ধ্যা বেলায় মেসে ফিরে আসেন মেসের মালিক কাম ম্যানেজার গোবিন্দ সামন্তের বাড়ি বাঁকুড়ায় উনি মাসে একবার বাড়ি যান কিছু জমি জমা আছে শ্রীপতি সরকার আমার পাশের ঘরে থাকেনউনি কোথাও যান না আমার এখন যা অবস্থা ওনার ও তাই , ত্রিভুবনে কেউ নেই একটা স্কুলে পড়ান দুটো টিউশনি করেন বই পড়ার শখ আছে ওনার সঙ্গেই আমার কিছু কথাবার্তা হয় এখানে কেউ অন্যের ব্যাপারে খুব একটা নাক গলায় নাআমার বাড়ি হুগলি জেলার একটি গ্রামে জানার পর কেউ আর খুঁটিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করেনিআমার ঘরটা খুবই ছোট; একটা খাট একটা ছোট টেবিল আর হাতল ভাঙ্গা একটা চেয়ার বাদ দিলে নড়াচড়া করার জায়গা নেই বললেই চলে৷ আমি অবশ্য এখন মুক্ত পুরুষ অমিতাভবাবু প্রথম দিন যা টাকা দিয়েছিলেন তা থেকে মেসের আগিম দিয়ে যে টাকা বেঁচে ছিল তা দিয়ে একটা ধুতি, দুটো খদ্দরের পাঞ্জাবী , দুটো গেঞ্জি, দুটো আন্ডার ওয়্যার, একটা দাঁতের মাজন আর একটা গামছা কিনেছি৷ সবই হাতি বাগান থেকে কেনা কত সহজে মানুষ বাঁচতে পারে, মেসে না এলে জানতে পারতাম না কোচিং ক্লাসের মাইনে পাওয়ার পর একটা ছোট রেডিয়ো কেনাই ছিল আমার একমাত্র বিলাসিতাকলেজ স্ট্রিটে গিয়ে কয়েকটা কবিতার বই আর অংক আর ফিজিক্সের বই সেকেন্ড হ্যান্ড বই এর দোকান থেকে কিনেছিঅমিতাভবাবুও কয়েকটা বই দিয়েছেন সব বই বিছানার উপরে রাখা মেসে খাওয়া দাওয়া খুব সিম্পল; সকাল আটটার সময় একপিস টোস্ট আর চা দুপুরে ডাল ভাত মাছের ঝোলচারা পোনা বা ছোট একপিস অন্য কোন মাছ রাত্রে মাঝে মাঝে আধ খানা ডিম থাকতআমি রাতে রুটি তরকারী খাই বুধবার দিন মাংস হত তবে তার জন্য তিন টাকা চাঁদা দিতে হয় একটা জাবদা খাতা কিনেছি আর দুটো ফাউনটেন পেন সুলেখা কালি ও কিনেছি রোজই ডায়েরী লিখছি খরচের হিসেব ও মেসের ঘরে কোন আলমারী নেই একটা সস্তা ফোমের ব্যাগ কিনেছিটাকা পয়সা মোবাইল ঘড়ি সব ব্যাগে থাকেমোবাইল অমিতাভ বাবু যেদিন নিয়েছিলেন তার পরদিনই ফেরৎ দিয়েছিলেন৷ ওনাকে অফিসের এক আমেরিকান ইঞ্জিনিয়ার মোবাইল দেখে বলেছেন, এই প্রযুক্তি আগামী তিরিশ বছর পরে আসতে পারে তার আগে নয়৷ কোচিং ক্লাসে আমার খানিকটা সুনাম হয়েছেওরা ছাত্র সংখ্যা অনুযায়ী টাকা দেয় তবে মোটামুটি দুশোর কাছাকাছি পাই৷ বাবুইকে পড়াতে কোন অসুবিধে হচ্ছে না৷ ইতি মধ্যে ক্যালকুলাস ও খানিকটা আয়ত্ত করেছে তবে ওর সবচেয়ে আগ্রহ আমার কাছে আগামী দিনের গল্প শোনা আমি যে ২০১৭ সালের লোক এটা ওর বাবা না বিশ্বাস করলেও ও পুরোপুরি বিশ্বাস করে৷ আমার সময়ে ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, আইপ্যাড ইত্যাদির কথা শুনতে খুব ভালবাসে৷ একদিন ফেসবুকের গল্প শুনে ওর চোখ চক চক করে উঠল বলল,আমি বড় হলে এসব দেখতে পাব?

     আমি বললাম,নিশ্চয়ই পাবে, কিন্তু তুমি তখন তোমার বাবার মত বড় হয়ে যাবে মোটের উপর আমি ভালোই আছি সুখ কাকে বলে এখনো জানি না তবে পরম শান্তিতে আছি প্যান কার্ড, আধার কার্ড, গাদা গুচ্ছে আই ডি পাস ওয়ার্ড মুখস্থ রাখার ঝামেলা নেইঅবসর সময়ে রেডিয়োতে গান শুনি, বই পড়ি, অঙ্ক কষি মাঝে মাঝে শ্রীপতি বাবুর সঙ্গে দাবা খেলিলোকটাকে আমার বেশ ভালো লাগে ট্রামের একটা মান্থলি করিয়েছি৷ ছুটির দিনে ধর্মতলা থেকে শ্যামবাজার চষে বেড়াই ১৯৭৫ সালের কলকাতার স্বাদ আর একবার পাওয়ার জন্য মাঝে মাঝে দু একটা চেনা মুখের দেখা পাই অন্তত চেনা চেনা মনে হয়৷ কিন্তু তাদের চোখের দিকে চেয়ে বুঝতে পারি আমাকে তারা বিন্দুমাত্র চিনতে পারেনি ইতিমধ্যে স্টারে একটা থিয়েটারও দেখেছিবাবুইকে নিয়ে একটা সার্কাসও দেখেছি বাবুইদের বাড়িতে গেলে ওর পিসি ইন্দুবালা না খাইয়ে ছাড়বেন না কোনদিন লুচি আলুর দম, কোনদিন বা সুজি আর মিষ্টি মাঝে মাঝে অমিতাভ বাবুর সঙ্গে নানান বিষয়ে গল্প করি মনে হচ্ছে আর একটা বন্ধনে জড়িয়ে পড়ছি৷ মন্দ কি! একেবারে মুক্ত পুরুষ হতে গেলে সাধু হতে হয়

     দেখতে দেখতে বর্ষাকাল এসে গেল একটা ছাতা না কিনলেই নয়শ্যামবাজারে কয়েকটা ভালো ছাতার দোকান আছেএগুলি আসলে কাপড়ের দোকান তবে বর্ষার আগেই ছাতা পাওয়া যায়; ছাতার স্টক ও ভালো আমি ট্রামে করে রূপবানীর স্টপে নামলামএকবার হাতিবাগান হয়ে যাব চশমার ডাঁটি আলগা হয়ে গেছেএখানে রাস্তার দোকানগুলোতে খুব সস্তায় চশমার ফ্রেম পাওয়া যায় কিন্তু ট্রাম থেকে নামতেই মাথায় আবার সেই শক আমি রূপবানীর দিকে তাকিয়ে দেখলাম পুরোনো একটা বাড়ি ভেঙ্গে তার জায়গায় ঝলমলে শপিং মল তাহলে কি আবার ২০১৭ সালে ফিরে এলাম? এখান থেকেই আমি ১৯৭৫ সালে ফিরে গেছিলাম৷ তাহলে কি অমিতাভবাবু, বাবুই, শ্রীগুরু মেস, শ্রীপতি বাবু সব স্বপ্ন! বা হ্যালুসিনেশন? কিন্তু আমার হাতে এখনো সেই ফোমের ব্যাগ, পকেটে পুরোনো টাকা! পরনেও ধুতি পাঞ্জাবী৷ তা হলে কি আর একটা প্যারালাল বিশ্বে ঢুকে পড়েছিলাম? ১৯৭৫ সালে অতীত আমি যে বিশ্বে ছিলাম সেখানে হয়ত বাবুইরা বা শ্রীগুরু মেস কিছুই ছিল না৷ তবে একটা খটকা লাগল ২০১৭ সালে এই শপিং মলটা ছিল না! লক্ষীনারায়ণ সাউর দোকানে গেলাম সন্দেহ নিরসন করার জন্য এই একটা দোকান যেখানে ওয়াজেদ আলীর কথাটা এখনো খাটে সেই ট্রাডিশন সমানে চলছে! শুধু মহাভারতের জায়গায় তেলেভাজা! তবে দোকানটা এখন আধুনিক রেস্তোঁরার মত ঝাঁ চকচকেদোকানের উর খুব বড় করে লেখা Laxminarayan Shaw and Sons. তেলেভাজা ছাড়াও নানা খাবার পাওয়া যায় আমি পরীক্ষা করার জন্য একটা একটাকার নোট দিয়ে দুটো কাশ্মীরি চপ দিতে বললাম৷ ১৯৭৫ সালে একটা চপের দাম ছিল চার আনা যে লোকটিকে টাকা দিলাম সে নোটটাকে উল্টে পাল্টে দেখে বলল,বাবু এ নোট কোথায় পেলেন?

     কেন বলতো?

     এতো বহুদিন বাতিল হয়ে গেছে দাদুর কাছে কয়েকটা আছে৷ শখ করে রেখে দিয়েছেন৷ আর তাছাড়া বাবু একটা চপের দাম চার টাকা

     আমি ব্যাগ খুলে নতুন পাঁচশো টাকার নোট দেখিয়ে বললাম,এটা চলবে?”

     হ্যাঁ বাবু, এটা চলবেকিন্তু এত ভাঙ্গানি তো এখন নেইবিকেলে আসবেন ভাঙ্গিয়ে দেব

     দোকানে একটাটা হিন্দি খবরের কাগজ দেখলাম একটা টেবিলের উপর ভাঁজ করে রাখা আজকের কাগজ কিনা জিজ্ঞেস করত লোকটা মাথা নেড়ে জানাল আমি ঠিকই আন্দাজ করেছিকাগজটায় আজকের তারিখ দেখে আমার ভিরমি খাবার অবস্থা আর কি৷ আজকের তারিখ পয়লা এপ্রিল দুহাজার আঠারো আমি তো আতান্তরে পড়লামএকবছরেরও বেশী সময় আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেছেবাড়ির লোকে নিশ্চয় থানা পুলিশ করেছে এতদিন পরে হয়ত ধরেই নিয়েছে আমি আর বেঁচে নেই সাত বছর নিরুদ্দেশ থেকে লোকে বাড়ি ফিরেছে এরকম ঘটনা কাগজে পড়েছিকিন্তু তারা কেউ ভবিষ্যৎ থেকে ফেরৎ আসেনিআমাকে আবার থানায় বা কোর্টে গিয়ে প্রমাণ করতে হবে আমিই সেই পদ্মনাভ চৌধুরীঅবশ্য আমার কাছে যে নতুন টাকাগুলো আছে তা এখনো বাতিল হয়নি৷ মোবাইলটা অন করার চেষ্টা করলাম, স্ক্রীন কালোখুব সম্ভব ব্যাটারিতে চার্জ নেই ব্যাগে দুটো ডেবিট কার্ড এখনো ভ্যালিড। বাড়ি ফিরে যাব, নাকি এই সুযোগে একেবারেই হারিয়ে যাব? আমি ধার্মিক নইকিন্তু উত্তর কাশী জায়গাটা আমার ভালো লেগেছেমাঝে মাঝেই মনে হত জীবনে যে কটা দিন আছে ওখানেই কাটাই৷ কিন্তু সংসারের মায়া কাটানো কঠিন ব্যাপার যদিও মেসে থেকে উপলব্ধি করেছি কত সহজে বেঁচে থাকা যায়৷ হাজারটা গ্যাজেট আর অপ্রয়োজনীয় ব্যস্ততায় আমরা জীবনটা জটিল করে তুলেছি৷ যে কটা টাকা এখনো ব্যাঙ্কে আছে উত্তর কাশী না হোক একটা ছোট নিরিবিলি জায়গায় কাটিয়ে দিলে মন্দ কি! শুধু কয়েকটি সাহিত্যের আর অঙ্কের বইএর বেশী কিছু দরকার নেই তবে বাবুইকে মিস করব৷

Tags: কল্পবিজ্ঞান গল্প, কল্পবিজ্ঞানের গল্প, তেলেভাজার একদিন, দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য (চিত্রচোর), দ্বিতীয় বর্ষ তৃতীয় সংখ্যা, পূজাবার্ষিকী, রাজকুমার রায়চৌধুরী

4 thoughts on “তেলেভাজার একদিন

  • October 24, 2017 at 3:22 am
    Permalink

    Aah, Jodi otite jete partam! kotojon r songe je dekha kora jeto!

    Reply
  • October 25, 2017 at 9:48 am
    Permalink

    যাহ! গল্পটা যেন ঠিক শেষ হল না।

    Reply
  • February 24, 2018 at 7:55 pm
    Permalink

    বড্ডো তাড়াহুড়ো করে লেখা হয়েছে যেন। যেন একঠোঙা তেলেভাজাও শেষ হলো না , গল্প ফুরিয়ে গেল। প্লট যা তাতে আরেকটু বিস্তৃতির দাবি রাখে বলে আমার মনে হয়েছে। একবছর তো কম সময় নয়, তার বর্ণনা এত সংক্ষিপ্ত কেন? এ যেন খসড়া, আসল গল্পটি লেখক পরে লিখবেন।
    গল্প লেখার সময় লেখকের শব্দ সীমার কথা মাথায় না রাখাই ভালো। পরে সময় নিয়ে সংক্ষেপ করাটাই ভালো। আরো লিখুন। প্লট আমার মনমতো, তাই মন ছুঁয়ে গেছে। কিন্তু আরেকটু মুন্সিয়ানার ছোঁয়া চাই, নইলে ঠিক মন ভরে না।

    Reply
  • November 5, 2019 at 4:57 am
    Permalink

    বাহ:। ভালোই লাগলো।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published.

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

error: Content is protected !!