রোবট চরিত্র
লেখক: রেবন্ত গোস্বামী
শিল্পী:
গৌতম বলে ডেকে, ‘শুনুন হে বিজ্ঞানী,
রোবট নতুন নয়— পুরানেতে এই জানি।
বেতাল নামে রোবট পুষেছেন বিক্রম;
আলাদিন পুষেছিল, সে দানবও নয় কম।
রামের যে হনুমান, আসলে রোবটই সে,
যে-কোনও মানুষকেই মেরে দিত সে পিষে।’
সাত্যকি বললেন, ‘শোনো ওহে গৌতম,
রোবটের সূত্রতে বলে নাকো সেরকম।
তিনটি সূত্র আছে রোবটের স্বভাবে,
শর্তও বলা যায়। একটারও অভাবে
রোবট হবে না সেটা, হবে ক্রীতদাসই সে—
প্রভুর আদেশে তাই মানুষ মারে পিষে।’
গৌতম বলে, ‘সে কী, তিন শর্ত? সে কেমন?
তিন সত্য জানি পড়ে সাতকাণ্ড রামায়ণ।’
সাত্যকি বললেন, ‘শোনো তবে গৌতম,
একে অন্যের সাথে সম্বন্ধ কী রকম।
রোবট করে না কভু মানুষের অপকার,
বরং চেষ্টা করে রাখতে স্বার্থ তার।
এটাই প্রথম সূত্র। দ্বিতীয়টা হল এই—
প্রভুর হুকুমটাকে প্রাণপণে রাখবেই,
যদি না প্রথম সূত্র করে সেটা লঙ্ঘন।
এই দুই সূত্র তো বুঝেছ এতক্ষণ?’
গৌতম বলল যে, ‘এ দুটো তো বুঝলাম।
তৃতীয় সূত্রে কি সে চাইবে কাজের দাম?’
সাত্যকি সোম হেসে বললেন, ‘না হে, না।
রোবট কখনও কাজে প্রতিদান চাহে না।
সেও তো বাঁচতে চায় জীবনের যুদ্ধে,
তবে সেটা না গেলে ও-দুটোর বিরুদ্ধে।
এ তিন সূত্র ছাড়া রোবটই হবে না সে,
মানুষ জাতিকে ওরা এতই ভালোবাসে।’
গৌতম বলে, ‘জানি আইজ্যাক নিউটন
তিনটি সূত্র তিনি করেন উদ্ভাবন।
এ তিন সূত্রও কি তাঁরই আবিষ্কার?’
সোম কন, ‘তাঁর ছিল অন্যসব কারবার।
রোবট বিষয়ে যিনি লিখেছেন এইসব—
আইজ্যাক, তবে তিনি আইজ্যাক অ্যাসিমভ।
এই তিন সূত্রেতে এঁকেছেন চিত্র,
যেমনটি হওয়া চাই রোবট চরিত্র।’
Tags: কবিতা, রেবন্ত গোস্বামী, ষষ্ঠ বর্ষ প্রথম সংখ্যা